লিজবন, পর্তুগাল থেকে ফিরে: ভাস্কো দা গামা। অনুসন্ধানী পর্তুগিজ নাবিক ও ইউরোপ-ভারতবর্ষ নৌপথ আবিষ্কারক প্রথম পশ্চিমা অভিযাত্রী।
দা গামার ইউরোপ-ভারতবর্ষ নৌপথ আবিষ্কার পর্তুগিজদের এশিয়ায় নিজেদের উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ বিষয়টিসহ নানা কারণে পর্তুগিজদের কাছে পূজনীয় ব্যক্তিত্ব দুঃসাহসী দা গামা। ইতিহাসবিদদের মতে, ভারত অভিমুখে পর্তুগিজদের প্রথম ও চতুর্থ নৌবহরের নেতৃত্ব দেন ভাস্কো দা গামা। প্রথম অভিযানের চার বছর পর সবচেয়ে বিশাল বহর নিয়ে ভারত অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন তিনি। প্রায় এক দশক চেষ্টার পর জাহাজডুবি এবং বিভিন্ন হামলায় কয়েক ডজন নৌযান ও হাজারো প্রাণহানির মধ্য দিয়ে তিনি ১৪৯৮ সালের ২০ মে কেরালার কালিকট নৌবন্দরে পৌঁছেন।
তার এই নৌপথ আবিষ্কার সেসময়কার পরাক্রমশালী পর্তুগিজ সাম্রাজ্যের অর্থনীতিতে ব্যাপক সাফল্য নিয়ে আসে। পর্তুগিজ বণিকরা ভিড়তে থাকেন ভারতবর্ষে। নিয়ন্ত্রণ নেন অর্থকরী বস্তু মশলার ওপর, যাতে পর্তুগিজ অর্থনীতির পুরো চেহারাই বদলে যায়।
প্রাথমিক অবস্থায় দক্ষিণ এশিয়া থেকে মরিচ ও ডালচিনি এনে ব্যবসা শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে অন্যান্য মশলাও ভারত থেকে জাহাজ ভরে নিয়ে আসতে থাকেন পর্তুগিজ বণিকরা, যা সেসময় ইউরোপিয়ানদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। জাতীয় অর্থনীতিতে এ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৫২৪ সালে ভাস্কো দা গামাকে ভাইসরয় উপাধি দিয়ে ভারতবর্ষের গভর্নর নিযুক্ত করা হয়। নৌ অনুসন্ধান ইতিহাসের শীর্ষ নায়ক হিসেবে দা গামা পর্তুগিজদের কাছে এখনও মহান পূজনীয় ব্যক্তিত্ব। তার সম্মানে রচিত হয়েছে পর্তুগালের জাতীয় মহাকাব্য ‘অস লুসিয়াদাস’।
ভারতে দা গামার প্রথম নৌযাত্রা বিশ্ব নৌ-যোগাযোগের ইতিহাসের মাইলস্টোন হিসেবে বিবেচিত হয়। সমুদ্রভিত্তিক বহু-সাংস্কৃতিক বিশ্ব গড়ার সূচনা পর্ব হিসেবে দেখা হয় দা গামার এ সমুদ্রযাত্রাকেই।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
এইচএ/