লন্ডন: মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি প্রতিরোধের দৃঢ় প্রত্যয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘শত কণ্ঠে মুক্তির গান’। বাংলাদেশের ৪৬তম বিজয় দিবস উপলক্ষে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) রাতের এ আয়োজনকে ঘিরে লন্ডনের রয়েল রিজেন্সি হল হয়ে উঠেছিলো ব্রিটেনে বসবাসরত বাঙালি শিল্পী ও প্রবাসীদের মিলনমেলা।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে ১শ’ ১০ জন নবীন-প্রবীণ শিল্পী মুক্তিযুদ্ধের ১২টি জনপ্রিয় গান একসঙ্গে একই মঞ্চে গেয়ে শোনান। এসব শিল্পীদের কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, কেউ কেউ দেখেছেন, আবার কেউ কেউ বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ এ অর্জনের উত্তরাধিকার বহন করছেন।
শিল্পীদের মধ্যে যেমন ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মাহমুদুর রহমান বেনু, তেমনি ছিলেন ব্রিটেনে বেড়ে ওঠা নাহিয়ান পাশা, রাফা হক, প্রপা রেজওয়ানা আনোয়ার ও মৃদুলের মতো এই প্রজন্মের শিল্পীরাও। তাদের সঙ্গে ছিলেন খ্যাতিমান শিল্পী হিমাংসু বিশ্বাস, লুসি রহমান, গৌরি চৌধুরী, আলাউর রহমান, ফজলুল বারী বাবু, মিতা তাহেরসহ অন্যরা।
এটিএন বাংলা ইউকে’র আয়োজনে পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন জনপ্রিয় উপস্থাপিকা উর্মী মাজহার। সমবেত সঙ্গীত নির্দেশনায় ছিলেন খ্যাতিমান শিল্পী ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও লন্ডনে বসবাসরত বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার লিখিত বাণী শোনানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করে বলেন, ‘এমন একটি উদ্যোগ প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিস্তারে ভূমিকা রাখবে’।
শেখ রেহানা তার লিখিত বাণীতে বলেন, ‘আমাদের সন্তান, যারা প্রবাসে জন্ম ও বেড়ে উঠেছে, মুক্তিযুদ্ধকে হৃদয়ে ধারণ করতে এ ধরনের অনুষ্ঠান তাদের সাহস যোগাবে’।
শত কন্ঠে মুক্তির গানের ফাঁকে ফাঁকে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. নাজমুল কাওনাইন, পংকজ দেবনাথ এমপি, ব্রিটেনে মুক্তিযুদ্ধের প্রবীণ সংগঠক সুলতান শরীফ, আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফারুক ও লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক ইমদাদুল হক চৌধুরী। কবিতা আবৃত্তি করেন উর্মী মাজহার ও সালাউদ্দিন শাহীন।
নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে যায়, ‘শত কণ্ঠে মুক্তির গান’-এর মতো এমন অনুষ্ঠানের সঙ্গে হাইকমিশন সব সময় সম্পৃক্ত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন হাইকমিশনার।
স্বাগত বক্তব্যে এটিএন বাংলা ইউকে'র সিইও হাফিজ আলম বক্স বলেন, ‘দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা এ আয়োজন করেছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তি সংগ্রামের জন্য বাঙালিদের তিলে তিলে প্রস্তুত করার পরই স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রিটেনে বেড়ে ওঠা মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মকেও আমরা তেমনি মূল শেকড়ে ফিরিয়ে নিতে ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শানিত করতে চাই’।
বহির্বিশ্বে এই প্রথম শত শিল্পী একসঙ্গে মুক্তির গান গেয়ে বাংলাদেশের বিজয় উৎসব উদ্যাপন করলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৬
এসএপি/এএসআর