মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশনের আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় দূতাবাসের শহীদ মিনারে দলমত নির্বিশেষে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান সূচি।
হাই কমিশনার মুক্তিযোদ্ধা একেএম আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও ফার্স্ট সেক্রেটারি মোসলেমা নাজনীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
এতে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতা বাঙালির চিরকালের অবিনাশী গান। স্বাধীনতা, প্রিয় স্বাধীনতা, স্বাধীনতা বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন। ২৬ মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানের শোষণ ও দুঃশাসনের নাগপাশ ছিন্ন করে স্বাধীন হয় প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।
বক্তারা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতের প্রথম প্রহরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার পর শুরু হয় সর্বাত্মক মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় মহান বিজয়।
প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। স্বাধীনতার স্বাদ পায় বাংলার মানুষ। বাঙালির চিরকালের গৌরব আর অযুত অহঙ্কারের এক অবিনশ্বর দিন । দীর্ঘকাল পরাধীনতার গ্লানি আর বিজাতীয় শাসন-শোষণের যাতাকল থেকে বেরিয়ে বাঙালির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার ভিত্তি তৈরি হয় ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে।
এক ক্রান্তিকাল পেরিয়ে আমাদের প্রিয় স্বদেশ ভূমি আজ স্বাধীন হলেও সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ আজও পুরোপুরি পায়নি এ দেশের মানুষ। ভৌগোলিক মুক্তি এলেও আসেনি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলার মাধ্যমেই অর্জিত হতে পারে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।
অন্যদিকে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ও স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে আজ সৃষ্টি হয়েছে অভূতপূর্ব এক গণজাগরণ। যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী ছাড়া গোটা জাতি এই দাবিতে একাট্টা।
আর আমাদের সামনে দিনবদলের হাতছানি নিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার। দেশের মানুষ আজ যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ে তোলার আকাক্সক্ষায় উজ্জীবিত।
এমনকি সকল ষড়যন্ত্র ও দুঃশাসনের চির অবসান ঘটিয়ে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও ঘাতক, যুদ্ধাপরাধীমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার আকাক্সক্ষায় আজ উদ্দীপ্ত গোটা জাতি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সেই সোনার বাংলা গড়ে তোলার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি প্রবাসেও উদযাপন করেছে এবারের স্বাধীনতা দিবস।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: আলমগীর হোসেন, সহ সভাপতি মকবুর হোসেন মুকুল, অহিদুর রহমান ওহিদ, হাজী সাত্তার, মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন মজনু, হুমায়ুন কবির, মাহতাব খন্দকার, শাখাওয়াত হক জোসেফ, মুকলেছুর রহমান, এ কামাল চৌধুরী, মোস্তফা তালুকদার, বাবলা মজুমদার, আবু হানিফ, মনসুর আল বাশার, জহিরুল ইসলাম জহির, বিজন মজুমদার, রেজাউল হক লায়ন, শরিফ হোসেন রাজা, জাকির হোসেন প্রমুখ।
এছাড়া দূতাবাসের শহীদ মিনারে পুস্পার্ঘ অর্পণ করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। পুস্পার্ঘ অর্পণের সময় উপস্থিত ছিলেন- মালয়েশিয়া বিএনপি নেতা মোশারফ হোসেন, তালহা মাহমুদ, এস এম বশির আলম, মির্জা সালাহ উদ্দিন, আহমেদ হোসেন সাগর, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী প্রমুখ। এ ছাড়া বাংলাদেশের মতো মালয়েশিয়ায়ও সোনার বাংলা জাতীয় সংগীত গাইলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৪