ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় দেশি স্বাদের রসনা বিলাস

মাজেদুল নয়ন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১৪
মালয়েশিয়ায় দেশি স্বাদের রসনা বিলাস ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: গত নভেম্বরে আমি আর বাংলানিউজের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ইশতিয়াক ভাই একসঙ্গে কুয়ালালামপুর ছিলাম ৪ দিন। প্রথম তিনদিন সোস্যাল বিজনেস সামিটে মালয়ী খাবার গিলতে হয়েছে ইশতিয়াক ভাইকে।

শেষ দিনে বললাম, চলেন বাঙালি খাবার খাওয়াবো। বুকিত বিনতাংয়ের কেন্দ্র তেংকাত তংশিনয়ে ‘রসনা বিলাস’ রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলাম তাকে।
 
রসনা বিলাসের বাহারি বাঙালি খাবার দেখে ইশতিয়াক ভাইয়ের মুখে জল চলে এলো এটা বুঝতে সময় নিলো না খুব একটা। দ্রুত বসে গেলেন খেতে। আহা! বাঙালি খাবার!!
 
ছোট মাছের তরকারি আর ডাল, সঙ্গে দেশি কায়দায় রান্না করা মুরগীর মাংস। তিনদিন পর পেট ভরে খেলেন তিনি।
 
মালয়েশিয়াল প্রথম দিন গিয়েই পারভেজ ভাইয়ের সঙ্গে যাই রসনা বিলাসে। চারদিকে চায়নিজ আর থাই রেস্টুরেন্টের ভিড়ে নিজের অবস্থান করে নিয়েছে রসনা বিলাস।
 
কুয়ালালামপুরে অবস্থানকালে ৩ দিন আড্ডা হয় রসনা বিলাসের মালিক আকাশের সঙ্গে। বেশ উদ্যমী তিনি।

বাংলানিউজকে বলেন, এখানে এসে দেখেছি ভালো বাঙালি খাবারের রেস্টুরেন্টের অভাব রয়েছে। যে দু’একটি রয়েছে, তারা ভারতীয় আর থাই খাবারই বেশি করে। তাই ভাবলাম রেস্টুরেন্ট যদি দেই তবে বুকিত বিনতাংয়েই। কারণ এখানে সবদেশের ট্যুরিস্টই আসেন। তারা বাংলাদেশের ‍রসনা দেখতে পাবেন।
 
প্রথম দিনেই আমি ‍নান রুটি আর গরুর পায়া খেলাম। সত্যি মনে হচ্ছিল দেশের কোনো রেস্তোরাঁয় বসে খাচ্ছি। ৪ জন শেফ আছেন রেস্তোরাঁয়। যারা বাংলাদেশে দীর্ঘদিন শেফের অভিজ্ঞতা নিয়ে মালয়েশিয়াতে গিয়েছেন।
 
বাংলাদেশি ট্যুরিস্টরা রসনা বিলাসে বাঙালি খাবারের আয়োজন দেখে চোখ কপালে তুলে ফেলেন। বাংলাদেশের অনেক রেস্তোরাঁতেও এতো দেশীয় খাবার পাওয়া যায় না। কি নেই? লাল শাক, পুঁই শাক, আলুর ভর্তা, কাঁচ কলা ভর্তা, শুটকি ভর্তা, ইলিশ মাছের তরকারি বা ভাজি, রুই মাছ, শিং মাছ, তেলাপিয়া, টেংরা মাছের ঝোল থেকে শুরু করে আরো কয়েক ধরনের মাছের তরকারি। আর গরুর মাংসের পাশাপাশি খাসির মাংসোতো রয়েছেই।
 
প্রবাসে শুধু সুস্বাদু দেশীয় খাবারের পাশাপাশি হালাল খাবারের নিশ্চয়তাও দেয় রসনা বিলাস। চিকেন বিরিয়ানি, কাচ্চি বিরিয়ানির পাশাপাশি তেহেরিও রয়েছে।
 
২০১৩’র মে মাসের প্রথম দিনে ২৫ জনের একটি দল নিয়ে যাত্রা শুরু করে আকাশের রসনা বিলাস।
 
সন্ধ্যার পর রসনা বিলাসে শুধু বাঙালি নয় বিদেশিরাও এখন ভিড় করে বাঙালি খাবারের স্বাদ নিতে। মালয়ী, ইন্দোনেশিয়ান, থাই নয় শুধু ইউরোপিয়ান আর আফ্রিকান ট্যুরিস্টরাও বাঙালি খাবারের স্বাদ নিতে চলে আসেন রসনা বিলাসে।
 
মালয়েশিয়াতে এখন বাংলাদেশিদের অভিজাত রেস্টুরেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয় রসনা বিলাসকে। বাংলাদেশের ট্যুরিস্ট ছাড়াও এক্সিকিউটিভ আর ব্যবসায়ীদের আড্ডার ভালো জায়গা হয়ে উঠেছে এ রেস্টুরেন্ট।
 
মঙ্গলবার সকালে কথা হয় আকাশের সঙ্গে। তিনি বলেন, এখন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হয় এখানে। পয়লা বৈশাখ, পয়লা ফাল্গুনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এখানে। আর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কমিউনিটি বেজ প্রোগ্রামগুলোরও আয়োজন করা হয়।
 
গত মে মাসে এক বছর পূর্তি  উদযাপন করেছে রসনা বিলাস বেশ হৈ-হুল্লোড় করেই।

আকাশ বললেন, অন্যান্য দেশের প্রবাসীরাও এখন এসে বলেন, সিডনি বা লন্ডনেও শতভাগ দেশি খাবারের এতো ভাল রেস্তোরাঁ নেই।
 
রসনা বিলাসের রয়েছে আউটডোরও। বেশ খোলা প্রশস্ত জায়গায় চেয়ার টেবিলে বাঙালি আর বিদেশিদের বসে জমজমাট আড্ডা। সঙ্গে রসনা বিলাসের বাঙালি খাবার।
 
তাই মালয়েশিয়াতে গিয়ে শতভাগ বাঙালি খাবারের স্বাদ পেতে হলে অবশ্যই যেতে হবে রসনা বিলাসে।
 
এছাড়াও ট্যুরিস্টদের জন্যে থাকা এবং পরিবহন সহযোগীতাও দেয় রসনা বিলাস কর্তৃপক্ষ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ