ঢাকা: জোহর বারু কেটিএম স্টেশনে নামি বিকেল ৪টায়। এক ঘণ্টা দেরি।
বললেন, শোনো মজার একটা জায়গায় নিয়ে যাবো তোমাদের। বাংলাদেশিরা বাজার করেন সেখানে। আর এসব কারণেই নাসিমুল ইসলামের সঙ্গে থাকাটাই আমোদের।
স্টেশন থেকে বিশ মিনিটের পথ। গাড়ি থেকে নামতেই মুরগীর কক্করও কক্করও আওয়াজ। দোকানদার বাংলাদেশি, পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন চায়নিজ মালিক। জিজ্ঞাসা করলাম মুরগী দেশি? দোকানদার হাসলো।
বাজারে ঢুকতেই মনে হলো দেশের কারওয়ান বাজার। ‘সাতু’ ‘সাতু’ আওয়াজ। ছোট ছোট প্লেটে এখানে সবজি বিক্রি হয়। যেমন একটা প্লাস্টিকের প্লেটে ৩টা শশা। দাম এক টাকা, যেটাকে বলছে ‘সাতু’।
নিউমার্কেটের মতোই দাম হাকাচ্ছে বিক্রেতারা। মাছের বাজার, মাংসের বাজার। এখানে সব হালাল, কারণ সবাই বাংলাদেশি এবং বেশিরভাগ ক্রেতাই মুসলিম। কই মাছ, অনেকদিন ধরে ফ্রিজে রাখা ইলিশ মাছ, তেলাপিয়া আরও হরেক ধরনের মাছ।
বাজারে রয়েছে চৈনিক আর মালয়ী দোকানদারও। তারা শিখে গেছে বাংলাদেশিদের সুর। চায়নিজ দোকানদের মুখ থেকে বের হচ্ছে, ‘এই দুই টাকা, দুই টাকা’। তাদের কথা শুনে হাঁ করে তাকিয়ে থাকি।
লাল টমোটো সামনে রেখে ইন্দোনেশিয়ান সব্জি বিক্রেতা হাকঁছেন, ‘এই তমেতো, তমেতো...। ’
এ বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা রিঙ্গিত বলে কম। সবাই রিঙ্গিতকে টাকা বলে।
‘সাতু-দুকা, তিনকা-পে…’ মানে এক প্লেট ২ রিঙ্গিত আর তিন প্লেট ৫ রিঙ্গিত। বলে হাঁক দিচ্ছেন বিক্রেতারা। এখানে বিক্রেতাদের অর্ধেকই নারী। মালয়ী নারীরা যে তাদের পুরুষদের তুলনায় বেশি পরিশ্রমী বোঝা যায় এখানেও।
এখানে ওজন হিসেবে বিক্রি হচ্ছে না সব্জি। বরং প্লেট হিসেবে। ক্রেতা পছন্দানুযায়ী প্লেট বেছে নিচ্ছেন।
নাসিমুল ইসলামের পকেট থেকে বের হলো বাজারের লিস্ট। আর আমাদের হাতে ঝুললো শশা, আনারস, বেগুন।
লিচু উঠেছে বেশ। আমাদের দিনাজুপরের লিচুর চেয়েও বড়। লিচু বিক্রি করছেন এক নারী। তিনি একটু বামে ফিরতেই মুহূর্তের মধ্যে একটি লিচুর খোসা ছাড়িয়ে মুখে পুরে নিলেন নাসিমুল ইসলাম। চোখ টিপ মেরে বললেন, ‘এটা ফাও, দেখেনি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৪