কুয়ালালামপুর (মালয়েশিয়া): মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের সবচেয়ে বড় কম্পিউটার মার্কেটের নাম- ‘লো ইয়াট প্লাজা’।
এখানে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫টি দোকান আছে।
এদিকে, ঈদের আগে ‘ঈদের সালামি’র নামে চালানো হয় পুলিশি হয়রানি। প্রতি বছর এসব দোকানে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তারা কামিয়ে নেয় বিশাল অংকের অর্থ। এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে এবারের ঈদের ঠিক আগের সপ্তাহে লো ইয়াটের নেট ওয়ার্ক কম্পিউটার এস. ডি. এন. বি. এইচ. ডি. দোকানে।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সৈয়দ সামিউল আলম প্রায় দুই বছর ধরে মালয়েশিয়ায় কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনের ব্যবসা করে আসছেন। লো ইয়াট প্লাজায় তার দোকান।
ঈদের এক সপ্তাহ আগে তার অনুপস্থিতিতে দোকানে এক বিক্রেতার ফোনকল আসে। তার দোকানে কিছু ল্যাপটপ বিক্রি করতে আগ্রহ দেখান তিনি। দোকানে কর্মরত কর্মচারীরা ক্রেতার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে সেই বিক্রেতা প্লাজার বাইরে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুরোধ জানান।
এদিকে, বাইরে বের হতেই পুলিশের বিশাল এক টিম তাকে আটক করে। এরপর তাকে নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে আটক করা হয় বাকি তিন কর্মচারীকে। চুরি করা ল্যাপটপ কেনার অভিযোগে তাদের সবাইকে আটক করা হয়।
এ সময় পুলিশ দোকান থেকে প্রায় ৩৭টি ল্যাপটপ, নগদ এক হাজার আটশ রিঙ্গিত এবং আরো ইলেকট্রনিকস সামগ্রী জব্দ করে।
দোকান মালিক সামিউল এ সময় দোকানের বাইরে ছিলেন। খবর পেয়েই তিনি ছুটে যান তার কর্মচারীদের খবর নিতে। তন্ন তন্ন করে খোঁজা হয় তাদের। পরে খবর পাওয়া যায় যে, কুয়ালালামপুরের বাইরে থেকে একটি টিম এসেছিল।
এরপর খোঁজ পেয়ে সেই থানায় গিয়ে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে নয় দিনের মাথায় তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু, ল্যাপটপগুলো এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। কেবলমাত্র সাত থেকে আটটি ল্যাপটপ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে দোকান মালিক সামিউল বাংলানিউজকে অভিযোগ করেন, প্রতি ঈদের আগে তারা এ ফাঁদ পাতে। এবার এর শিকার হয়েছি আমরা।
তিনি বলেন, আমরা এখানে বিদেশিরা যারা ব্যবসা করি, তাদের হয়রানির মাধ্যমে এ কাজগুলো করে আসছে তারা। অনেকে তাদের সঙ্গে অর্থ বিনিময়ের মাধ্যমে ছাড়া পায়। আর তা না হলে তাদের ধরে নিয়ে জেলে পুরে দেওয়া হয়।
সে কারণে তিনি অন্যান্য ব্যবসায়ীদের এ রকম প্রতারণার ফাঁদ থেকে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
সামিউল বলেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা খুব কম সময়ে বেশ উন্নতি করেছে। অনেকের কাছে এটি হিংসার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশিদের উন্নতি অনেকেই সহ্য করতে পারে না। এছাড়া জাতিগত বৈষম্য তো রয়েছেই। শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী বাংলাদেশি যারা আছেন, তারাও পুলিশের অদ্ভুত প্রশ্নের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হন।
তাদের পাসপোর্ট, ভিসা, লাইসেন্স সব ঠিক থাকলেও বিভিন্নভাবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০১৪