ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

সাড়ে ছয়শ’ টন কংক্রিটের নিচে চাপা পড়েন তিন বাংলাদেশি

কুয়ালালামপুর করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৪
সাড়ে ছয়শ’ টন কংক্রিটের নিচে চাপা পড়েন তিন বাংলাদেশি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুয়ালালামপুর: এমআরটি এর পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট। গত ২০১১ সালে থেকে মালয়েশিয়ার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য এমআরটি’র কাজ শুরু করা হয়।

৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রেলপথ বানানোর কাজে নিয়োগ দেয়া হয় হাজার হাজার বাংলাদেশি দক্ষ শ্রমিককে।

বিশাল এ রেলপথের কিছু অংশ মাটির নিচে এবং কিছু অংশ উড়াল সেতুর উপর যা বসানো কয়েক হাজার স্তম্ভের উপর। প্রতিটি স্তম্ভের মাঝখানে ৩৮ মিটার দীর্ঘ স্প্যান। একেকটির ওজন প্রায় ৬৫০ টন।
malosia_1
গত ১৮ আগস্ট সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কোটা দামানসারা সংলগ্ন সুঙ্গাই বুলুহ এলাকার রাবার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কাছে এমআরটি নির্মাণের কাজ চলছিল। রাতের খাবার খেয়ে কাজে ফিরছিলেন মোহাম্মাদ ফারুক খান (৩৮) মোহাম্মাদ আলাউদ্দিন মল্লিক (৩৪) এবং মোহাম্মাদ এলাহি হোসেন (২৭)। এরপর পরই বিকট শব্দে ৩৮ মিটার স্প্যানটি প্রায় ১৫-১৬ মিটার উচু থেকে কাত হয়ে মাটিতে পরে। সাতজন কর্মীর মধ্যে বাকিরা দৌড়ে সরে গেলেও রক্ষা হয়নি ফারুক, এলাহি ও আলাউদ্দিনের।

ফারুক এর বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়। বাকি দুজনের বাড়ি পাবনায়। মাত্র চার মাস আগে তারা কাজে যোগ দিয়েছিলেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং সহকর্মী কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া গ্রামের মো. সোহেল বলেন, এখানে প্রায় ৪ হাজার বাংলাদেশি কাজ করে। সবাই মিলেমিশে থাকি। গত চার মাস আগে ফারুক, এলাহি ও আলাউদ্দিন আমাদের সাথে কাজে যোগ দেয়। গতকাল রাতেও একসাথে রাতের খাবার খেয়েছি।

এ ঘটনার পর ওই দিন রাত আড়াইটার দিকে মোহাম্মাদ এলাহি হোসেনের (২৭) মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পর তা শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পরেছিল। এরপর মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে বাকি দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে মালয়েশিয়ান দমকল কর্মীরা। পোস্টমর্টেমের জন্য লাশ তিনটি সুঙ্গাই বুলোহ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
malosia_2
কর্মরত বাংলাদেশিরা জানালেন, প্রকৌশলী এবং তত্ত্বাবধায়কদের অপারগতার কারণেই এমনটি ঘটেছে। এদিকে এমআরটি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাতুক আযহার আব্দুল হামিদ এ ঘটনার পরপরই পদত্যাগ করেন।

মালয়েশিয়া সরকার এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের হাইকমিশনকে মৃতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ।

এর আগে মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার এ কে এম আতিকুর রহমান। এদিকে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান জানায়, বৈধ কাগজপত্র থাকায় ওই তিন শ্রমিক উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাবেন।

এদিকে তিন বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৪

** মালয়েশিয়ায় স্প্যান ভেঙে তিন বাংলাদেশি নিহত
** উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা, আটক ৩০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ