ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

নিম্নমানের মালয়েশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের মেলা ঢাকায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৪
নিম্নমানের মালয়েশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের মেলা ঢাকায়

ঢাকা: দৈনিক পত্রিকায় আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে আর জমজমাট প্রচারণা চালিয়ে মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী টানছে বাংলাদেশ থেকে। রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে মেলা করে শিক্ষার্থী ভর্তি করাচ্ছে এসব বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন পরীক্ষার সার্টিফিকেটের ফটোকপি এবং পাসপোর্টের মূলকপি নিয়ে গেলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যাচ্ছে।
 
গত ১৩ আগস্ট প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য এখন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আর তাই এসব শিক্ষার্থীকে টার্গেট করে মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পাড়ি জমিয়েছে এখানে।
 
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শনি থেকে সোমবার ৩ দিনব্যাপী মালয়েশিয়ান শিক্ষা মেলার আয়োজন করেছে স্কলারস নামে একটি এজেন্সি প্রতিষ্ঠান। এ মেলায় মোট ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ অংশ নিচ্ছে বলে প্রকাশ করছে স্কলারস। এছাড়াও মালয়েশিয়ার ধর্ণাঢ্য বিশ্ববিদ্যালয় মোনাস ইউনিভার্সিটিও শনিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজন করেছে ‘মোনাস ওপেন ডে’।
 
স্কলারস আয়োজিত মেলায় শর্ত সাপেক্ষে ৫০ শতাংশ বৃত্তি এবং ফ্রি বিমান টিকেটের অফারও দেয়া হয়েছে। সার্টিফিকেটের ফটোকপি, পাসপোর্ট সাইজ ছবি ও মূল পাসপোর্ট নিয়ে গেলেই ভর্তি হওয়া যাবে ফাউন্ডেশন কোর্স, ডিপ্লোমা, স্নাতক, মাস্টার্স ডিগ্রি এবং পিএইচডি’তে।
 
মেলায় অংশ নিচ্ছে ম্যানিপল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কেডিইউ ইউনিভার্সিটি, টেইলর ইউনিভার্সিটি, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি, হেরোয়েট ওয়াট ইউনিভার্সিটি, এপিইউ ইউনিভার্সিটি এবং এরিকান কলেজ।
 
শনিবার রাজধানীর রুপসী বাংলা হোটেলে, রোববার গুলশানের স্পেকট্রা কনভেশন সেন্টারে এবং সোমবার উত্তরায় স্কলারসের অফিসে মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
 
মালয়েশিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি কেবাংসাং মালয়েশিয়ার পিএইচডি শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এসব বিশ্ববিদ্যালয় এখানকার তৃতীয় শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির নামে মূলত আদম পাচার হয় এখানে।
 
তিনি বলেন, অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম চাকরির কথা বলে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করা হয়। তবে সত্যি বলতে শিক্ষার্থীদের জন্যে এ দেশে পার্ট টাইম জব নেই।
 
মালয়েশিয়ার সবচেয়ে নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি মালায়ার শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, মোনাস বা টেইলর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রয়েছে এখানে অভিজাত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে। আমাদের দেশের নতুন গজানো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো এগুলো। এ ‍দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থীর স্নাতক সম্পন্ন করতে থাকা খাওয়াসহ ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ হয়ে যাবে। অথচ এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রির মূল্য নেই আমাদের দেশেও।
 
ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়ার শিক্ষার্থী রাফসান বাংলানিউজকে বলেন, এখানকার কলেজগুলোর মূল ব্যবসাই হচ্ছে আদমের ব্যবসা। আর অভিজাত যেসব বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে সেগুলোর মূল টার্গেট ব্যবসা। এখানে একটি ডিগ্রি নিলে অস্ট্রেলিয়া বা আমেরিকায় আরো উচ্চ ডিগ্রি নেয়া সহজ বলে প্রচারণা চালানো হয়। তবে যে খরচ প্রয়োজন, এতে একেবারেই ইউরোপে বা অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চ শিক্ষা নেয়া যায়।
 
তিনি বলেন, গত ৬ বছরে অনেক শিক্ষার্থীকে দেখেছি, এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে মালয়েশিয়া এসে বিপদে পড়েছে। এখানে এসে খরচ সামলাতে হিমশিম খায়। আবার পার্ট টাইম চাকরি করলেও আর পড়াশোনা চালানো সম্ভব হয় না। ফলে একসময় স্টুডেন্টশিপও বাতিল হয়ে যায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ