কুয়ালালামপুর (মালেয়েশিয়া): বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স (বিএমসিসিআই) এর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী একক বাণিজ্য মেলা ‘শো-কেজ বাংলাদেশ ২০১৪’ শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের কেএলসিসি পেট্রোনাস কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এ মেলা রোববার পযর্ন্ত চলবে।
মেলার উদ্বোধনকালে মালয়েশিয়া সরকারের ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি মিনিস্টার ধাতু লী চেহ লিয়ং বলেন, মালয়েশিয়া-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রাসারে এ মেলার গুরুত্ব অপরিসীম। দু’দেশের অর্থনৈতিক সামাজিক উন্নয়নে এ মেলা মাইলফলক হয়ে থাকবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, দু’দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মনোভাব থাকায় তৃতীয় বারের মতো এ বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ মেলার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হবে এবং সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে।
বিএমসিসিআই-এর উদ্যোগে আয়োজিত বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের কমিশনার এ কে এম আতিকুর রহমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিল্পখাতে বিদ্যমান সম্ভাবনা এবং আবহমান কালের কৃষ্টি, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও শিল্প উদ্যোগ বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে এ মেলার আয়োজন। শোকেজ বাংলাদেশ ২০১৪ পর্যটন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, কৃষিভিত্তিক শিল্পখাত গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
মেলা আয়োজক কমিটির ডিরেক্টর রাকিব মো. ফকরুলের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, হাইকমিশনের কমার্শিয়াল ফার্স্ট সেক্রেটারি ধনঞ্জয় কুমার দাস, ফার্স্ট সেক্রেটারি মোসলেমা নাজনীন, রাশেদ বাদল সহ হাইকমিশনের কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও, বিশেষ কারণে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি।
মেলায় প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনসিসি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক, আড়ং, ড্যাফোডিল গ্রুপসহ ৪৫টি প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে।
প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সিনিয়র জেনারেল মেনেজার নাফিজ এম আহমাদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স বাংলাদেশে যেমন মানুষকে সেবা প্রদান করছে তেমনি আমরা প্রবাসে শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করতে চাই। প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ শেষ পর্যন্ত জমা থাকে না। বছরের পর বছর অত্যন্ত পরিশ্রম করে শ্রমিকদের খালি হাতেও বাড়ি ফিরতে দেখা যায়। লাইফ ইন্স্যুরেন্সের গুরুত্ব কী তা তাই এই মেলার মাধ্যমে তাদের বোঝাতে চাই।
মেলাতে আসা ড্যাফোডিল গ্রুপের বিজনেস ডেভলপমেন্ট ম্যানেজার আমেনা হাসান আনা বাংলানিউজকে বলেন, ড্যাফোডিল গ্রুপ বাংলাদেশে একটি পরিচিত প্রতিষ্ঠান। যা শিক্ষা ও আইটি সেক্টরে সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। প্রবাসীদের জন্য মালয়েশিয়াতেও আমরা কাজ করতে চাই। এখানে বাংলাদেশের প্রচুর মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, ইউরোপের পাশাপাশি পূর্ব এশিয়া পর্যটন নগরী মালয়েশিয়ায় যাতে ব্যবসার সুযোগ হাতছাড়া না হয়, সে জন্য দু’দেশের প্রতিনিধিরা মিলে মিশে কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশি তৈরি পোশাক শিল্পের নতুন বাজার হবে মালয়েশিয়া- এমনটা আশা করছে দু’দেশের সরকারের প্রতিনিধিরা। ইতিমধ্যে তৈরি পোশাকসহ ৩শ‘ পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। এ সুয়োগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, পাট ও পাটজাত পণ্য, হস্তশিল্প, চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ ও হারবাল পণ্য, প্লাস্টিক, সিরামিক, টেবিল ওয়্যার, হালাল খাদ্য রপ্তানির বিশাল সুযোগ রয়েছে দেশটিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২১০৪