কুয়ালালামপুর থেকে: এবার মালয়েশিয়া আসার পরদিন দুপুরে গেলাম রেস্টুরেন্টে। ভাত খাওয়ার পর বেশ সুর করে বেয়ারাকে বললাম, ‘সাতু তে আইস’।
মালয়েশিয়ায় স্থানীয়দের প্রিয় পানীয় এই তে-ও-আইস আর তে-আইস। এখানে বরফের ব্যবহার অত্যধিক। খাবারের দোকানে বসলে আপনাকে গ্লাসে যে পানি দেওয়া হবে তার অর্ধেক থাকবে বরফ।
‘তে’ অর্থ চা। তাই বরফের হলেও ঠাণ্ডা পানিতে কিন্তু চা বানানো হয় না। হালকা গরম পানিতে বানানো হয় লাল চা। তার উপর বেশি করে বরফ দেওয়া। আর এখানে পানীয় অন্যসব জিনিসের মতোই চা খাওয়া হয় স্ট্র দিয়েই। উপরের দিকে বরফ থাকায়, প্রথম দিকে তে-ও-আইসের উপরের দিক ঠাণ্ডা আর নিচের দিক একটু গরম।
আর তে-আইস হচ্ছে বরফের দুধ চা। এই দুধ চা’য়ে থাকে বেশ পরিমাণে ক্রিমার। চায়ের স্বাদটা পাওয়া দুষ্কর।
আর এমনি ‘তে’ বললে আপনাকে দেওয়া হবে এক মগভর্তি গরম চা। আর এটা এমনই গরম যে, একটানে সুরুৎ করেই আপনি গিলতে পারবেন।
এখানে চা মানেই মগভর্তি। আর একটা তে-আইস বা তে-ও-আইস নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রেস্টুরেন্টে সময় কাটিয়ে দেয় মানুষগুলো। দেড় রিঙ্গিত থেকে আড়াই রিঙ্গিত (৩৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা) হয় সাধারণ দোকানগুলোতে এই চায়ের দাম। এক মগ তে-আইস আর সঙ্গে সিগারেট নিয়ে পুরো একটা ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করা যায় রেস্টুরেন্টে। এখানকার রেস্টুরেন্টে সিগারেট খাওয়া উন্মুক্ত।
তে-ও-আইসে যদি একটু লেবু দিয়ে দেওয়া যায়, তবে সেটা হয়ে যায়, লেমু-তে-ও-আইস। এটা একটু হালকা হয়। আর চায়ের সঙ্গে লেবুর শরবতের স্বাদও পাওয়া যায়।
ক্রিমার দেওয়া দুধ চায়ে বেশি করে আদা বাটা দিলে সেটা খেতে যাই হোক, কাশি বা সর্দির হয়তো মহৌষধ। আর এটাকেই বলে, তে-জিঞ্জার। খাওয়ার সময় গলায় ধরে। তবে একবার আমার কাশিতে বেশ উপকার হয়েছিল।
এ দেশে তে-আইস আর তে-ও-আইসের জনপ্রিয়তা এতোই বেশি যে, মানুষ পলিথিনে করেও নিয়ে যায় বাসায়। আবার একহাতে মোটরসাইকেলের ব্রেক আর অন্যহাতে পলিথিন বাঁধা তে-আইস। পলিথিনের একদিক বেঁধে অন্যদিকে স্ট্র বের করে দেওয়া হয়।
আর অবশ্যই এসব পানীয়তে চিনি থাকে অনেক বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৪