কুয়ালালামপুর (মালয়েশিয়া) থেকে: ২৬ নভেম্বর স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা ত্যাগ করি মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজে মালয়েশিয়ায় আসতে সময় লাগে ঘণ্টা চারেক।
কুয়ালামপুরের রাতের দৃশ্য দেখে ক্যামেরাবন্দি না করে পারলাম না। এর পরে নিরাপদে কুয়ালালামপুরে অবতরণ করি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজে। আসলে প্লেনে থেকে দেখা আলোকসজ্জার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায় কুয়ালালামপুর শহরের।
এটি এক পরিকল্পিত নগরী। তাই তো সেই পরিকল্পনার সম্মুখ চিত্র ধরা পরে প্লেন থেকেই। শহরের সড়ক, দালান ও দোকানপাট সব কিছুই তৈরি হয়েছে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনায়।
মালয়েশিয়া মূলত সাগরবেষ্টিত পাহাড়ের রাজ্য। একসঙ্গে পাহাড় ও সাগরের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে দেশটি। পাহাড় কেটে তৈরি শহরের সড়কগুলোতেও সেই সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনার চিত্র ফুটে উঠেছে।
প্লেন থেকেই এই সড়কের চিত্র ধরা পড়ে। এ যেন এঁকে বেঁকে চলাৎ বৃহৎ কোনো সরিসৃপ। ঢাকা নগরীর মতো সড়কে নেই কোনো সিএনজি অথবা রিকশার প্রাধান্য। প্রাইভেট কার ও গণপরিবহনই চলাচলের একমাত্র মাধ্যম।
পুরো সড়কে নেই কোনো স্পিড ব্রেকার অথবা ঘন ঘন ইউটার্ন নেওয়ার ব্যবস্থা। অন্যতম জনবসতির শহর ঢাকায় হাতেগোণা কয়েকটি ফুটওভারব্রিজ থাকলেও কুয়ালামপুরে এই সংখ্যা নির্ণয় করা কঠিন। শহরের রয়েছে একাধিক মেট্রোরেল লাইন। তবে মেট্রোরেলগুলোর যাত্রীবাহী কোচের সংখ্যা ৭ থেকের ১০ এর মধ্যে।
কুয়ালালামপুর থেকে গেন্টিং হাইল্যান্ড ও পুত্রাজায়ায় ভ্রমণের পথে মিলবে না কোনো যানজটের দেখা। তবে কুয়ালালামপুরে যানজট নিত্যনৈমিত্যিক ঘটনা।
মালয়েশিয়া সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে যোগাযোগ খাতকে। কারণ এই দেশের সরকার মনে করে, দেশের উন্নতি মানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি। এছাড়া মালয়েশিয়ায় দর্শনার্থীদের টানতে হলে অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। শহরে রয়েছে আন্ডারপাস সড়ক ও ফুটওভার ব্রিজ।
আমাদের দেশে (বাংলাদেশ) যাত্রীদের চলাচলের জন্য আন্ডারপাস ব্যবহার করা হলেও এখানে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে আন্ডারপাস তৈরি করা হয়েছে।
ঢাকা শহরের বনানীতে একটি চলন্ত সিঁড়ির দেখা মিললেও এই শহরের রয়েছে হাজারও চলন্ত সিঁড়ি। যাত্রীরা এর সাহায্যে নিরাপদে চলাচল করতে পারে। ছোট ও বড় সড়কের প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছে এই দেশের সরকার। তাইতো সোডিয়াম বাতির আলোকসজ্জা আকাশে উড়া প্লেন থেকেও নজর কাড়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৪