কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়া থেকে: কুয়ালালামপুরের কেএল সেন্টার সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) পড়ন্ত বিকেল।
ফ্রি বাসে যাত্রীদের কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয় না। যাত্রীরা বাসের জন্য অপেক্ষা করে না, বরং বাসই যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করে। কুয়ালালামপুরের অধিকাংশ স্থানেই এই বাসসার্ভিস চালু রয়েছে। এটি এখন মালয়েশিয়ান ও প্রবাসীদের অন্যতম জনপ্রিয় পরিবহন।
কুয়ালালামপুরে একদিকে যেমন রয়েছে উন্নতমানের ফ্রি বাস। অপরদিকে কুয়ালালামপুরের পুডে সেন্ট্রাল (pudu sentral) বাস টার্মিনালও অনেক উন্নত ও আধুনিক।
১০ তলা বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে রয়েছে উন্নতমানের এসি’র ব্যবস্থা। এই টার্মিনাল থেকে কুয়ালালামপুরের প্রায় সকল রুটের বাস পাওয়া যায়।
টার্মিনালের ভেতরেই রয়েছে টিকিট কাটার ব্যবস্থা। নেই কোনো ধূলাবালি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও কুয়ালালামপুরের ব্যস্ততম বাস টার্মিনালকে দূর থেকে দেখে মনে হয় এটি উন্নতমানের কোনো হাসপাতাল। আন্ডারগ্রাউন্ডের মধ্য দিয়ে টার্মিনালে প্রবেশ করে পরিবহন এবং যথাসময়ে টার্মিনাল ছেড়ে যায়।
পর্যটক আকৃষ্ট করার জন্য টার্মিনাল থেকে বিলাসবহুল, এসি ও ফ্রি ওয়াইফাই এসব বাস চালু করেছে মালয়েশিয়া সরকার ।
প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত একটানা ফ্রি সার্ভিস দেয় পরিবহণ সংস্থাটি। এতে হাজার হাজার পর্যটক এবং স্থানীয় যাত্রী বিনা পয়সায় ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে থাকেন।
মালয়েশিয়ার সরকারি পরিবহন সংস্থা রেপিড কেএল এর এক কর্মকর্তা ‘ফ্রি সার্ভিস’ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা খুব ভাগ্যবান যে, পর্যটকরা আমাদের দেশে ঘুরতে আসে। তাই আমাদের সরকার সবসময়ই পর্যটকদের ভালো সেবা দিতে বদ্ধপরিকর। আমরা আমাদের সেবার মান ও পরিধি যত বেশি সম্প্রসারিত করতে পারবো তত বেশি পর্যটক আমাদের দেশে ঘুরতে আসবে। ’
‘এতে আমাদের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। পর্যটন শিল্পকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য বর্তমানে অনেকগুলো পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী নিত্য-নতুন সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই আমরা এই সেবা চালু করেছি। ’
২০১৩ সালের শেষদিকে কুয়ালামপুরের নানা রুটে এই সেবা চালু হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম বুকিত বিনতাং-কেএলসিসি-পাসার সিনি- বুকিত বিনতাং রুট।
আধুনিক বাস সার্ভিস ও ফ্রি ভ্রমণের সুযোগ আপনাকে দিবে এক নতুন অভিজ্ঞতা। কুয়ালালামপুরের নাভী পাসারসিনি থেকে শুরু করে বাংলা মার্কেট নামে খ্যাত ‘কোতারায়া’ রুটে এই সার্ভিস চালু রয়েছে।
বুকিত বিনতান থেকে একই সার্ভিসের ‘রেড লাইন’ নামক বাসে উঠে যেতে পারবেন আধুনিক মালয়েশিয়ার প্রতীক কেএলসিসি (টুইন টাওয়ার) পর্যন্ত।
আরেকটি ফ্রি সার্ভিস ‘ব্লু-লাইন’ বাসে উঠে যেতে পারবেন সোগো কমপ্লেক্স, চৌকিট ও কেএল সেন্ট্রালে।
কুয়ালালামপুরে রিকশা ও সিএনজিতে চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। যাত্রীদের অন্যতম ভরসা বাস ও ট্যাক্সি। তবে ট্যাক্সিতে যাতায়াত অনেক ব্যয়বহুল। ট্যাক্সিতে উঠলেই ১৫ থেকে ২০ রিঙ্গিত বা বাংলাদেশি টাকায় ৩৪৫ থেকে ৪৬০ টাকা গুণতে হয়।
এজন্য মালয়েশিয়ান ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে এখন প্রিয় পরিবহন গো কেএল। বর্তমানে কুয়ালালামপুর সিটির প্রায় সবকটি রুটেই এই সার্ভিস চলছে।
মালয়েশিয়া ঘুরতে আসা ভ্রমণপিপাসুরা কুয়ালালামপুরকে ভালোভাবে দেখার জন্য বেছে নিতে পারেন এই আধুনিক বাস সার্ভিসটিকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৪