কুয়ালালামপুর: ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ছুটির দিন হলেও মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন বাংলাদেশিরা। কর্মচারীরা কাজে ব্যস্ত, ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনায় ব্যস্ত, ভ্রমণপিপাসুরা ব্যস্ত ভ্রমণে।
বাংলানিউজ গিয়েছিল কুয়ালালামপুরের ব্যস্ততম এলাকা টুইন টাওয়ার প্রাঙ্গণে। বিশাল লম্বা টাওয়ার দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। আর এর মাঝে বাংলাদেশিদের সংখ্যাও উল্লেখ করার মত। কথা হয় এমন অনেকের সঙ্গে।
দেশকে অসম্ভব রকমভাবে অনুভব করেন সবাই। আক্তার সাহেব কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। জিজ্ঞেস করলাম তাকে। তিনি বললেন, দেশ তো দেশই। বিদেশের মাটিতে যখন রাস্তায় হাঁটি তখন মনে হয় এই গাছ আমার না, এই রাস্তা আমার না, এই বাতাস আমার না। প্রচণ্ড রকম মিস করি আমার দেশকে।
বাংলাদেশি এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, একা থাকলেই দেশের কথা মনে হয়। আর বাংলাদেশ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি, কিন্তু দিতে পারিনি কিছুই। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, আশা করি একদিন না একদিন কিছু দিতে পারব।
অনেকে আবার ক্ষোভে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বলেন, আজ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এর মত দেশ এতো উন্নতি করছে, কিন্তু আমরা সেই পেছনেই পড়ে আছি। আজ আমাদের কুয়ালালামপুর শহরের মত শহর নেই। কিন্তু এই দেশের উন্নতি হয়েছে মাত্র কয়েক বছরেই। দেশের সরকারকে উন্নয়নের জন্য চিন্তা করতে হবে বেশি বেশি।
এদিকে মাহমুদুল হক মিশু ও তার বন্ধুরা এসেছেন বেড়াতে। দেশের প্রতি শ্রদ্ধা অনেক তাদের। তারা বলেন, মায়ের যেমন তুলনা হয় না, তেমনি নিজের দেশেরও তুলনা করা যায় না। যদি সুযোগ পাই তাহলে দেশের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দেব।
রেজাউল করিম ও সঞ্জয় ঘোষ ব্যস্ত ছবি তুলতে। তবুও তাদের কাছ থেকে কিছু সময় নেওয়া গেল। তারা বললেন, এক কথায় এই দিনটি আমরা ভুলতে পারব না। বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি। আমরা চাই চিরকালই এটি বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোন দেশ যেন না হয়, নিজের দেশের মাটি সবসময় গর্বের সঙ্গে বেঁচে থাকুক।
এরকম বেশ কয়েকজন বাংলাদেশির সঙ্গে দেখা ও কথা হয়। আনন্দ ও ক্ষোভের সংমিশ্রণ দেখা যাচ্ছিল সবার মাঝেই। তবে একথা সত্যি, বাংলাদেশিদের মত করে নিজের দেশকে কেউ ভালবাসতে পারে না। নানা ঝুট ঝামেলা থাকা সত্ত্বেও দেশপ্রেমের এই গভীর টান সবার মাঝেই নজরে পড়ে।
লাল সবুজের পতাকা বাইরে দেখা না গেলেও মালয়েশিয়ায় এই দশ লক্ষ বাংলাদেশির প্রত্যেকের মনেপ্রাণে জড়িয়ে আছে মহান বিজয় দিবস।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৪