ক্যামেরুন হাইল্যান্ডের এগ্রিকালচারাল কো-অপারেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি ওং সেং ই বলেন, চাহিদার তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ শ্রমিকের সংকট রয়েছে। ফলে প্রায় এক চতুর্থাংশ জমি এখন অকেজো।
নিউ সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, অনেক বছর ধরেই শ্রমিকের সংকট বিরাজমান। তবে কখনোই পরিস্থিতি এতোটা ভয়াবহ ছিল না। উৎপাদন সমস্যার কারণে কৃষকরা বাজার পতনের শঙ্কায় রয়েছেন। বিশেষ করে যারা তাদের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করেন।
'শ্রমিক সংকটের কারণে চাষ ও পুনরায় বীজ রোপণে দেরি হচ্ছে, ফলে ফসলও কমে যাচ্ছে। এর মানে তারা তাদের চুক্তির শর্ত মানতে পারছেন না। ফলে সবজির দাম বাড়ছে। ’
ক্যামেরুরন হাইল্যান্ডস মালয় ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দাতুক সৈয়দ আবদুল রহমান বলেন, অনেক কৃষকই ভৌগলিক সীমাবদ্ধতার কারণে ভাড়া করা শ্রমিক ব্যবহার করছেন। এছাড়াও অনেক কৃষকের প্রযুক্তি ব্যবহারেও উৎসাহ নেই। বিশেষ করে যারা কয়েক বছরের জন্যে জমি বর্গা নিয়ে চাষ করছেন। আবার অনেক কৃষকই কৃষি কাজ ছেড়ে দিচ্ছেন বা বিদেশি শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন পুরোপুরি। কারণ দেশি শ্রমিকরা বেতন অনেক বেশি চান, যেটা কৃষকরা দিতে ইচ্ছুক নন।
একজন অদক্ষ শ্রমিকের বেতন ক্যামেরুন হাইল্যান্ডে ১ হাজার রিঙ্গিত (২১ হাজার টাকা) থেকে ১ হাজার ১শ রিঙ্গিত (২৩ হাজার ২০০ টাকা)। আর যদি শ্রমিক পদোন্নতি হয়ে সুপারভাইজার হন, তবে দুই হাজার রিঙ্গিত থেকে ৩ হাজার রিঙ্গিত (৪২ হাজার টাকা থেকে ৬৩ হাজার টাকা) পর্যন্ত হয়।
সৈয়দ বলেন, ইমিগ্রেশন বিভাগের ক্যামেরুন হাইল্যান্ডে একটি অফিস বসানো প্রয়োজন। তাহলে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া সহজ হবে। বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের অনুমোদনের বিষয়টি নির্ভর করে কৃষকের মোট জমির পরিমাণ এবং কি ধরনের শষ্য চাষ করছেন তার ওপর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশা অনুযায়ী এক একর জমিতে শুধু তিন জন বিদেশি শ্রমিককে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।
ফসল বিশেষজ্ঞ কেসি কেওয়াং বলেন, সরকার থেকে এমন কিছু চাহিদা রয়েছে যেটা আসলেই মেটানো প্রায় অসম্ভব। যেমন শ্রমিকদের আবাসস্থলের ফিটনেস সার্টিফিকেট। এখানে শ্রমিকদের আবাসস্থলগুলো অনেক দুর্গম এলাকায় আবার পাহাড়ের চূড়ায়। এসব স্থানে বেশিরভাগ সময়ই অস্থায়ী আবাসস্থল গড়ে তোলা হয়। এসব স্থানে চাইলেও মালিকরা স্থায়ী আবাস গড়ে তুলতে পারেন না। টয়লেট ব্যবস্থাও অপ্রতুল। কারণ সেখানে বিদ্যুৎ এবং বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নেই।
পিপলস প্রগ্রেসিভ পার্টির সভাপতি তান শ্রী এম কায়ভিয়াস বলেন, বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে ক্যামেরুন হাইল্যান্ডে ১৫ হাজারের বেশি শ্রমিক রয়েছেন। এদের মধ্যে অনেক বাংলাদেশি এখন নিজেরাই অবসরপ্রাপ্ত কৃষক বা ওরাং আসলিদের থেকে জমি বর্গা নিয়ে কৃষি কাজ করছেন।
দেশের কৃষিখাতকে বাঁচাতে আরো বেশি বিদেশি শ্রমিক প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৮
এমএন/এএ