ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ইউএনওর নামে ঘুষ গ্রহণ, ইউপি চেয়ারম্যান-সচিবের নামে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৩
ইউএনওর নামে ঘুষ গ্রহণ, ইউপি চেয়ারম্যান-সচিবের নামে মামলা

সিরাজগঞ্জ: এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের বিল ফাইল প্রস্তুতের কথা বলে ও ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ), ইউএনও এবং প্রকৌশলীর নাম ভাঙিয়ে ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার পাশাপাশি প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিবের নামে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।  

একই সঙ্গে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৪ জানুয়ারি) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. কাইয়ুম আলী সেখ বাদী হয়ে তাড়াশ আমলি আদালতে ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্ট ও তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব বাসুদেব ঘোষের নামে মামলাটি দায়ের করেন।  

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কামাল পারভেজ বলেন, বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য তাড়াশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন।  

আদালতের মামলা ও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সগুনা ইউনিয়নে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের ৩১ লাখ ৩২ হাজার ৪৬০ টাকা ব্যয়ে ১৪টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ঠিকাদার মনোনীত হন সিরাজগঞ্জ সদরের ‘মিম এন্টারপ্রাইজ’। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দু’টি প্রকল্পের আংশিক কাজসহ ১২টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন।  

এর মধ্যে আংশিক কাজ করা ৬ লাখ ৬৫ ও ৬ লাখ ১৫ হাজার টাকার প্রকল্প দু’টি থেকে মিম এন্টারপ্রাইজকে বাদ দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার নিজেই করেন। নামমাত্র কাজ দেখিয়ে ১২ লাখ ৮০ হাজার টাকা অর্থ আত্মসাৎ করেন।  

মামলায় বাদী আরও অভিযোগ করেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অপর ১২টি প্রকল্পের কাজ শতভাগ বাস্তবায়ন করার পরও তাদের পাওনা ১৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৩৮ টাকা বিলের জন্য আবেদন করে প্রতারিত হন। চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত সচিব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল না দিয়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য তালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে ঠিকাদারের প্রতিনিধি কাইয়ুম আলীর কাছ থেকে ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রকৌশলীর নাম ভাঙিয়ে এবং বিলের ফাইল প্রস্তুত করার কথা বলে কয়েক দফায় ৪ লাখ টাকা ঘুষ নেন। এদিকে ঘুষ নেওয়ার পর পাওনা টাকার মধ্যে ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৫৮৬ টাকা বিল দেন। বাকি ৯ লাখ টাকা ৫৭ হাজার ৭৩২ টাকার বিল কৌশলে আত্মসাৎ করার উদ্দেশে পরে দেবেন বলে জানান। সেই বিলের জন্য একাধিকবার তাগাদা দিয়েও বিল ছাড় করাতে ব্যর্থ হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এ অবস্থায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি কাইয়ুম আলী জানতে পারেন, তাদের পাওনা বিলের ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩২ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান ও তৎকালীন সচিব। শুধু তাই নয়, ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিব পরস্পর যোগসাজশ করে ২০২০-২১ অর্থ বছরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ করা দু’টি প্রকল্প তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ছিনিয়ে নিয়েছেন। বারবার চেষ্টার পরও পাওনা বুঝে না পেয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।