হবিগঞ্জ, কুমিল্লা: ভুয়া পরিচয় দিয়ে ২২ বছর কারারক্ষী পদে কর্মরত থাকা তাজুল ইসলাম (৪২) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র্যাব। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বাসিন্দা মঈন উদ্দিন খানের নাম ব্যবহার করে তিনি ২২ বছর ধরে চাকরি করছিলেন।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ কুমিল্লা ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তিন সেট কারারক্ষী ইউনিফর্ম, একটি কারারক্ষী জ্যাকেট, একসেট কারারক্ষী রেইনকোর্ট, ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি তার কাছে থেকে জব্দ করা হয়।
আটক তাজুল ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল এলাকার মৃত কালা মিয়ার ছেলে।
একই নিয়োগ পরীক্ষা দেন কুমিল্লার এক ব্যক্তি। তিনি অকৃতকার্য হন। পরে কৃতকার্য মঈনের পরিচয়, নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য সব কাগজপত্র নকল করে চাকরি নেন কুমিল্লার তাজুল ইসলাম। ২০২০ সালের শেষ দিকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে সিলেট বিভাগে ২০০ জন কারারক্ষী সিলেটের স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও প্রায় ২০-২২ বছর যাবত চাকরি করে আসছে বলে সংবাদে প্রকাশিত হয়। এরপরই মঈনের ঘটনাটি সামনে আসে। প্রকৃত মঈন এটি নিয়ে আদালতে মামলা করে। মামলার পর ভুয়া মঈন (তাজুল ইসলাম) তাকে ১০ লক্ষ টাকা প্রদানের প্রস্তাব দেয়। এতে মঈন রাজি না হলে ভুয়া মঈন (তাজুল ইসলাম) আত্মগোপনে চলে যান। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভুয়া মইনকে খুঁজতে থাকেন। এর মধ্যেই তিনি লাপাত্তা হয়ে যাওয়ায় র্যাবের সহায়তা চান ওই কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে তার পরিচয় শনাক্ত করে র্যাব। বৃহস্পতিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, ২০০১ সালে মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর গ্রামের মো. নুর উদ্দিন খানের ছেলে মঈন উদ্দিন কারারক্ষী পদে চাকরির জন্য আবেদন করেন। কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া লিখিত, মৌখিক ও শারীরিক পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণও হন। সেখান থেকে জানানো হয়, প্রত্যেকের স্থায়ী ঠিকানায় নিয়োগপত্র পরবর্তীতে ডাকযোগে পাঠানো হবে। কিন্তু নিয়োগপত্র না পাওয়ায় মঈন আর চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি।
এ ঘটনার ২১ বছর পর ২০২২ সালের ১২ আগস্ট মঈন উদ্দিন খান কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানতে পারেন তার নাম ব্যবহার করে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে কেউ একজন চাকরি করছেন। এ নিয়ে ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি মাধবপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরে সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো. কামাল হোসেনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মঈন উদ্দিন খান বিষয়টি অবগত করেন। এরপর তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হবিগঞ্জের জেল সুপারকে নির্দেশ দেন সিলেটের কারা উপ-মহাপরিদর্শক। জেলা কারাগারের জেলার জয়নাল আবেদীন ভূইয়া চিঠি ইস্যু করে মঈন উদ্দিন খান নামের দুইজনকেই কারাগারে হাজিরের জন্য জানান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে হবিগঞ্জের আসল মঈন উদ্দিন খান হবিগঞ্জ কারাগারে উপস্থিত হন। কিন্তু সেখানে আসেননি মঈন উদ্দিন নামধারী তাজুল।
এ ঘটনায় গত বছরের ২১ নভেম্বর বাংলানিউজকে খবর প্রকাশ হলে দেশজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়।
তার আগে ২০২০ সালের শেষ দিকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়ায় সিলেট বিভাগে ২০০ জন কারারক্ষী সিলেটের স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও প্রায় ২০-২২ বছর ধরে চাকরি করে আসছেন বলে সংবাদে প্রকাশিত হয়। এরপরই মঈনের ঘটনাটি সামনে আসে। প্রকৃত মঈন এটি নিয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলার পর ভুয়া মঈন (তাজুল ইসলাম) তাকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এতে মঈন রাজি না হলে ভুয়া মঈন (তাজুল ইসলাম) আত্মগোপনে চলে যান। আর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভুয়া মইনকে খুঁজতে থাকেন।
এর মধ্যেই তিনি লাপাত্তা হয়ে যাওয়ায় র্যাবের সহায়তা চান ওই তদন্ত কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন অনুসন্ধান করে তার পরিচয় শনাক্ত করে র্যাব। পরে বৃহস্পতিবার তাজুলকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন- হবিগঞ্জের মঈনের নামে চাকরি করছেন কুমিল্লার মঈন!
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৩
এফআর