দিনাজপুর: ১৯৭১ সালের গণহত্যার সংখ্যা নিয়ে যারা সংশয় প্রকাশ করে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
রোববার (১৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দিনাজপুরে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
দীপু মনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীরা মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে ছোট করে দেখতে চায়। তারা বাঙালির এ অর্জনকে নস্যাৎ করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুলনা, রাজশাহী, পঞ্চগড়, দিনাজপুরের বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চলে হারিয়ে যাওয়া ১৯৭১ সালের বদ্ধভূমি ও নির্যাতন কেন্দ্রগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের আর্কাইভ ও জাদুঘরে প্রায় দশ হাজার ছবি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জরাজীর্ণ জাদুঘর ভবন থেকে উন্নত ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গণহত্যা জাদুঘরের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হলো গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং (পিজিটি)’ কোর্সের ব্যবস্থা। যা শুধু মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক ট্রেনিং দেওয়াই নয়, বরং নতুন নতুন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক গবেষকের সৃষ্টি করে। ফলে আগামী দিনের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে। শিক্ষা ব্যবস্থা এখন শুধু শ্রেণীকক্ষের চার দেয়ালে বন্দী থাকবেন না।
দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সহায়তায় এবং মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃত মন্ত্রণালয়ের একটি গবেষণা প্রকল্পের অধীনে জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে গণহত্যা-নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ শীর্ষক নবম পিজিটি কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন খুলনা গণহত্যা জাদুঘরের সভাপতি ড. মুনতাসীর মামুন।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে তিনি বলেন, আমাদের দেশের সঠিক ইতিহাস ও বাংলা ভাষা এবং সঠিক বানানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আজকের পিজিটি কোর্সের মাধ্যমে যারা গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে শিক্ষা নিলেন তারা অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণে কাজ করবেন। মুক্তিযুদ্ধ এখনো প্রাসঙ্গিক বিষয় কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীরা এখনো রয়েছে। তাদেরকে বাঁধা প্রদান করে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হচ্ছে। ভবিষ্যতেও তৃণমূল পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের গবেষকরা সঠিক ইতিহাস তুলে ধরবেন বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন নবম পিজিটি কোর্সের পরিচালক অধ্যক্ষ মোজাম্মেল বিশ্বাস ও শিক্ষা বোর্ডের সচিব জহির উদ্দিন।
জানা গেছে, দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সহায়তায় নবম পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং (পিজিটি) কোর্সে এবার ১০০ প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। এদের মধ্যে যারা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণার থিসিস জমা দিয়েছেন তাদের সনদপত্র প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩
এমজে