ঢাকা: শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রপ লিমিটেডের সম্মেলন কক্ষে এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনসার ভিডিপির ৩৮তম বিসিএস কোর্সের পরিচালক সারওয়ার জাহান চৌধুরী ও ৩৮তম বিসিএস কোর্সের সহকারী পরিচালক রোকসানা বেগমের নেতৃত্বে ৩৬ জনের একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল।
উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, ডেইলি সানের সম্পাদক এনামুল হক চোধুরী, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক জুয়েল মাজহার, কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মোহাম্মদ আলী, নিউজ টোয়েন্টিফোরের নির্বাহী সম্পাদক রাহুল রাহা।
এ সময় সংবাদপত্রের কার্যক্রম এবং আনসার-ভিডিপির কর্মকর্তাদের কার্যক্রম নিয়ে মতবিনিময় করে উভয় পক্ষ। এক প্রশ্নের জবাবে ডেইলি সানের সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকদের কাজ সংবাদ খোঁজা। তারা সে কাজেই ব্যস্ত থাকেন। কিন্তু, বিভিন্ন সময়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এর ফলে এক ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয়। যে জটিলতার কারণে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে বাধার সৃষ্টি হয়।
ছবি: জিএম মুজিবুর
নিউজ টোয়েন্টিফোরের নির্বাহী সম্পাদক রাহুল রাহা বলেন, এখন মূলধারার গণমাধ্যম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কাছে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এত নেতিবাচকতা চলছে, মানুষ সেখান থেকে বের হতে পারছে না। নেতিবাচক খবর কিন্তু নেতিবাচক খবর না, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ইতিবাচক রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার তৈরি করা। এটিই গণমাধ্যমের মূল দৃষ্টিভঙ্গি। ইতিবাচক খবর আমরা তুলে ধরছি এবং তার প্রভাব ইতোমধ্যেই পড়া শুরু করেছে।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক জুয়েল মাজহার বলেন, সংবাদপত্র মানুষের কাছে যায়, মানুষের কাছে খবর পৌঁছে দেয় এবং সমাজের অসংগতি, অনিয়ম তুলে ধরে। মূলধারার গণমাধ্যমের প্রধান কাজ হলো, অনেক কিছু মেশানো জিনিসের মধ্য থেকে প্রকৃত সংবাদ তুলে আনা।
কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী বলেন, সংবাদপত্রে ঢেউ থাকবে, ঢেউয়ের চাপ থাকবে। কীভাবে ব্যালেন্স করে এগিয়ে যাবেন, সেই কৌশল আপনাকে ঠিক করতে হবে। আমরা সবই তুলে ধরতে পারি। যেটা প্রথমে ধরতে পারি না, সেটা হয়তো ভেতরের পাতায় ধরতে পারি। যেটা নিউজে ধরতে পারি না, সেটা সম্পাদকীয়তে ধরতে পারি।
ছবি: জিএম মুজিবুর
প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, আনসার-ভিডিপির ৩৬ জন কর্মকর্তা এখানে এসেছেন এবং আমাদের সঙ্গে মতবিনিময় করলেন। কীভাবে সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়, কীভাবে আমরা আমাদের কাজগুলো করি—এমন নানা প্রশ্ন তাদের ছিল। আমরা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এ ধরনের সাক্ষাতে যেটা হয়, আনসার-ভিডিপির মতো একটি বড় বাহিনীর সঙ্গে জড়িত মানুষেরা এখানে এসেছেন, এই বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গণমাধ্যম নিয়ে কী ভেবেছেন জানতে পেরে আমরা উপকৃত হয়েছি। পাশাপাশি তারাও জানতে পেরেছেন সংবাদপত্রগুলোর কার্যক্রম। কেন নেতিবাচক সংবাদ বেশি হচ্ছে, কেন আমরা ইতিবাচক সংবাদ করতে চাই—এ সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়েছে এবং আমি মনে করি আমরা উপকৃত হয়েছি।
সারওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, আমরা ৩৮তম বিসিএসের ৩৬ জন কর্মকর্তাদের নিয়ে শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে এসেছি। আমরা সবাই জানি যে, এই প্রতিষ্ঠানের মিডিয়ার ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। কারণ তারা ৩টি প্রথম সারির পত্রিকা প্রতিনিয়ত বের করছে, যারা সব সময় বস্তনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। এই কারণে আমাদের কর্মকর্তাদের এখানে নিয়ে আসা। গণমাধ্যমের সঙ্গে আমাদের সুন্দর যোগাযোগ থাকে সব সময়। আমরা চাই, ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ এখনকার মতো ভবিষ্যতেও একই ধারা বজায় রাখুক।
পরে ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের পক্ষে ইমদাদুল হক মিলন আগত প্রতিনিধিদলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ও শুভেচ্ছা স্মারক গ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২৩
এমকে/এমজেএফ