যশোর: যশোরের চৌগাছা উপজেলার স্বরুপদাহ গ্রামের ভুয়া স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদানের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি পুলিশ ভেরিফিকেশনে ভুয়া স্থায়ী ঠিকানায় চাকরিতে যোগদানের বিষয়টি ধরা পড়েছে।
জানা যায়, যশোরের চৌগাছা উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের স্বরুপদাহ গ্রামে নিজের স্থায়ী ঠিকানা দেখিয়ে বাবার প্রাথমিক শিক্ষক কোটায় চাকরি নিয়েছেন সম্রাট আলমগীর। নিয়োগ ও যোগদানের কাগজপত্রে বাবার নাম তাহাজ্জত হোসেন এবং মায়ের নাম চায়না বেগম গ্রাম ও ডাকঘর স্বরুপদাহ, উপজেলা চৌগাছা, জেলা যশোর দেখিয়েছেন।
গত ২৪ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে যোগদানের পর বিশেষ শাখার পুলিশ সদস্যরা ভেরিফিকেশন করতে গ্রামে খোঁজ খবর নিলে সম্রাট যে স্বরুপদাহ গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দ নন সেটি প্রকাশ্যে আসে।
গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য ফখরুল ইসলাম বলেন, সম্রাট আলমগীর নামে গ্রামে কেউ তাহাজ্জত হোসেনের ছেলে নেই। শুনেছি গ্রামের একজনের ভাগ্নের (বোনের ছেলে) এই নামে চাকরি হয়েছে। এমন কারও আমি স্থায়ী নাগরিক হিসেবে কোনো প্রত্যয়নপত্র দিইনি।
স্বরুপদাহ গ্রামের বাসিন্দা উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষক এবং আরেকটি বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষকও সম্রাট আলমগীর যে গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা নন সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ভেরিফিকেশনের দায়িত্বে থাকা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) উপ-পরিদর্শক মাজহারুল ইসলাম বলেন, সম্রাট আলমগীর স্বরুপদাহ গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা নন, তিনি নানা বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করেছেন বলে জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বিষয়ে ভেরিফিকেশন রিপোর্ট দেওয়া হবে।
স্বরুপদাহ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল কদর ও ইউপি সচিব সাধন চন্দ্র সাংবাদিকদের জানান, সম্রাট আলমগীর ভুল বুঝিয়ে ইউনিয়নের নাগরিকত্ব সনদ নিয়েছেন। তারা জানান, এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হবে।
চৌগাছা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অভিযুক্ত সম্রাট আলমগীর ও তার বাবার সকল কাগজপত্র প্রতিবেদন আকারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, আলীশাহ যদুনাথপুর স্কুলসহ ওই এলাকার পাঁচটি স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম চৌগাছার মধ্যে। তবে তাদের ভূমি, নাগরিকত্বসহ অন্যান্য সকল কার্যক্রম ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার মধ্যে। সে হিসেবে তিনি বাবার কোটা পাবেন। তবে সে কোটায় মহেশপুর উপজেলায় চাকরি করতে হবে।
যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, চৌগাছা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২৩
ইউজি