সাভার (ঢাকা): করোনা ও ছত্রাকের কারণে গত দুই বছরে সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামের ফুল চাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই ক্ষতিকে পুষিয়ে নিতে আসছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, পহেলা ফাগুন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের প্রায় ১৫শ’ কৃষক ৩শ’ হেক্টর জমিতে সারা বছরজুড়েই বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল চাষ করে। আর বিরুলিয়া ইউনিয়নে বিদেশি ফুল জারবেরা, মাম, জিপসি, গ্লাডিওলাসের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি চাষ হয়ে আসছে গোলাপের। সাভারের গোলাপ গ্রামে প্রায় ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা রয়েছে।
ফুল চাষিরা বলছেন, গত দুই বছর করোনার কারণে সব ধরনের সামাজিক উৎসব বন্ধ থাকায় ফুল বিক্রি না হওয়ায় তাদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি এবার পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন তারা।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে ফুল চাষিদের ব্যস্ততার চিত্র।
লুৎফর নামে এক চাষি বাংলানিউজকে বলেন, সামনে ভালোবাসা দিবস, পহেলা ফাগুন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রয়েছে। এ তিন দিবসের জন্য বছরজুড়ে আমরা চেয়ে থাকি। এবার আশা করি ভালোই বেচাকেনা করতে পারবো।
দুই বিঘা জমিতে গোলাপের চাষ করেন শাহা-আলম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত দুই বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের চাষ ভালো হয়েছে। গাছে গাছে ভালো ফুল ফুটেছে। এখন পর্যন্ত বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে।
দেশে চাহিদা অনুযায়ী তাজা ফুল উৎপাদন হওয়ায় সরকারের কাছে বিদেশ থেকে আমদানি করা কৃত্রিম ফুল নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে রফিকুল নামে এক চাষি।
শামসুল নামে এক খুদ্র ফুল ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখন এক থুড়া (খাচি) ফুল বিক্রি করছি ৫০০ টাকা করে। আর একটি ফুল বিক্রি করছি ১৫ টাকা করে। ১৪ তারিখ এগুলোর দামও বেড়ে যাবে। চাহিদাও রয়েছে অনেকে।
সাভারে বিরুলিয়ায় গোলাপের পাশাপাশি বিদেশি ফুল জারবেরা ও চাষ হচ্ছে। প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপুল সংখ্যক পর্যটক এখানে ঘুরতে আসেন। তাই ফুল দেখতে আসা পর্যটকদের ভিড়ে বিরুলিয়া এখন মুখরিত।
মিরপুর থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন মিতালি আক্তার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এমন সৌন্দর্য আসলে সবারই উপভোগ করা উচিত। এখানে না এলে বোঝা যেত না কতটা সুন্দর এখানকার পরিবেশ।
সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, করোনার কারণে বিরুলিয়ার ফুল চাষিরা যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন সামনের তিনটি দিবসে চাষিরা যাতে ফুলের ন্যায্যমূল্য পান সেই বিষয়টি বিবেচনা করে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে চাষিরা যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেই লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি অফিস তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে এবং বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে এবার সাভারের ফুল চাষিরা প্রায় ২০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৩
এসএফ/আরবি