ফরিদপুর: ফরিদপুর সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের দয়রামপুর গ্রামের ১২ বছরের শিশু জাভেদ। জাহাঙ্গীর কবিরাজ ও আঞ্জুয়ারা বেগম দম্পতির ২ মেয়ে ১ ছেলের মধ্যে সবার ছোট সে।
আর সব শিশুর মতো দুরন্ত শৈশব কাটেনি জাভেদের। মাত্র আড়াই বছর বয়সে ব্লাড ক্যানসার ধরা পরে তার।
এর পর থেকে জাভেদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে বাড়ি, জমি, অর্থ সব হারিয়ে নিঃস্ব গোটা পরিবার। টাকার অভাবে গত দেড় বছর ধরে সব ধরনের চিকিৎসা বন্ধ জাভেদের। এখন চোখে ইনফেকশন হওয়ায় নষ্ট হতে চলছে জাভেদের দৃষ্টিশক্তিও।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জাভেদের ক্যানসারের চিকিৎসায় খরচ পড়বে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। তবে আপাতত এ শিশুর চোখ বাঁচাতে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা লাগবে।
ছেলের এমন দুঃসময়ে জাভেদের বাবা জাহাঙ্গীর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাকে অবস্থান করছেন। তাও ফেরারী হয়ে। ইরাকে একসময় জাহাঙ্গীর মাত্র ২০ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন একটি কোম্পানিতে। ছেলের এই অবস্থায় দেশে ফিরলে বেকার হয়ে পরবেন তাই ফিরেননি। কিন্তু এখন ইরাকে অবৈধ হয়ে যাওয়ায় চাকরি চলে গেছে জাহাঙ্গীরের। গত কয়েক মাস যাবৎ পরিবারকে সংসার খরচও দিতে পারছেন না, পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ইরাকে।
এদিকে চোখের সামনে ছেলের কষ্ট পাওয়ার দৃশ্য দেখে আর চিকিৎসা না করাতে পারার বেদনায় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জাভেদের মা আঞ্জুয়ারা।
এবিষয়ে কথা হয় জাভেদের খালা স্বপ্নার সঙ্গে। তিনি বলেন, ডাক্তারের ভিজিট দেওয়া, ওষুধ কেনা বা একটা পরীক্ষা করানোর কোনো অবস্থাই নেই আমাদের। চোখের সামনে দেখছি একটা ফুটফুটে ছেলে মৃত্যুর দিকে চলে যাচ্ছে। ন্যূনতম চিকিৎসাটাও করাতে পারছি না।
পারিবারিক সূত্র জানায়, জন্মের পর থেকেই জাভেদের জ্বর ঠাণ্ডা কখনোই সারতো না। পরে ফরিদপুরের এক শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শে ঢাকায় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালে জাভেদের ব্লাড ক্যানসার ধরা পরে। তখন জাভেদের বয়স আড়াই বছর।
সম্প্রতি জাভেদের চোখে ইনফেকশন দেখা দিয়েছে, আর এতে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছে সে। ছেলের এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে পরিবারের সদস্যরা এসেছিলেন ফরিদপুর প্রেসক্লাবে। তাদের আশা সাংবাদিকরা অসহায় জাভেদের কথা তুলে ধরলে, দেশের হৃদয়বান মানুষদের নজরে আসলে নিশ্চয়ই জাভেদের চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
দেশ ও প্রবাসের হৃদয়বান ভাইদের কাছে আবেদন সহযোগিতার আবেদন রাখেন জাভেদের মা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৩
এসএএইচ