ঢাকা: তামাক ব্যবহারের মাত্রা এবং এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাবের শিকার হওয়া জনসংখ্যার অনুপাতের বিচারে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি।
ধূমপান নিয়ন্ত্রণে তামাক আইন শক্তিশালী করা জরুরি বলে মনে করছে তামাক বিরোধী সংগঠন উন্নয়ন সমন্বয়।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন বক্তারা তামাক আইন শক্তিশালী করার দাবি জানান।
বক্তারা ধূমপান ও তামাক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক এবং তামাক আইন শক্তিশালী করা এবং এই আইনের প্রয়োগ নিয়ে বক্তব্য রাখেন।
সভাপতির স্বাগত বক্তব্যে উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ধূমপানে কেউ যেন উৎসাহিত না হয়, সেজন্য আইন করতে হবে। ডেজিগনেটেড স্মোকিং এরিয়া (ডিএসএ) বাতিল করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিয়ম করেছিলাম তামাক চাষে কোনো কৃষি ঋণ দেওয়া হবে না। আমরা এ আইন এখনো বলবৎ রেখেছি। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন করে কৃষি ঋণ বন্ধ করেছি। কিন্তু তামাক শিল্প কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি।
তিনি আরও বলেন, তামাক আমাদের বন্ধ করতে হবে। শুধু আইন দিয়ে এটা বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু আইন থাকা জরুরি। এখন তরুণরা যে ই-সিগারেট ব্যবহার করছে, এগুলোও আইনের আওতায় এনে বন্ধ করতে হবে। আগামীতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন সুস্থ হয়ে বেড়ে উঠতে পারে, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ভোরের কাগজে আমি ৩২ বছর ধরে কাজ করছি। আমরা কখনো তামাকের বিজ্ঞাপন ছাপিনি। তখনকার সময়েই আমরা এ সাহসিকতা দেখিয়েছিলাম। সরকার কি আসলেই চায় যে, তামাক কমুক? সরকার যদি আসলেই চায়, তাহলে কালই ধূমপান বন্ধ হয়ে যাবে।
এটিএন নিউজের চিফ এক্সিকিউটিভ এডিটর মুন্নী সাহা বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো যে সিএসআর করে, সেগুলো বন্ধ করতে হবে।
নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের তিনি ধূমপান ছেড়ে দিয়ে ধূমপানবিরোধী প্রতিবেদন করার আহ্বান জানান।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহম্মেদ বলেন, সচেতনতা ও আইন করার একটি ইমপ্যাক্ট সমাজে আছে। তাই আইনের প্রয়োগ করতে হবে এবং সচেতনতা বাড়াতে হবে। পাঠ্যপুস্তকেও তামাকের খারাপ দিক লেখা থাকতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, রাঙ্গামাটির সাবেক চেয়ারম্যান নব্য বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, যারা ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দেয়, তাদের হাত অনেক লম্বা। কিন্তু তবুও আইনের প্রয়োগ করতে হবে। ধূমপানের সঙ্গে আমাদের অন্যান্য মাদকের দিকেও নজর দেওয়া উচিত। আশা করি প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে আমরা এটি বন্ধ করতে পারব।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
সঞ্চালনা করেন জ্যেষ্ঠ প্রকল্প সমন্বয়কারী শাহীন উল আলম।
সংবাদ সম্মেলন আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাবেক ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলাম, নাট্যকার রুমা মোদক, সাবেক জাতীয় ফুটবলার রেহানা পারভীন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
ইএসএস/আরএইচ