বরগুনা: বরগুনার তালতলীতে প্রাইভেট শিক্ষকের বেতের আঘাতে প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রী আহত হয়েছে। আহত স্কুল ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে তালতলী উপজেলার জাকিরতবক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। সকলেই অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন।
আহত শিশু মিসফার বাবা ইউপি সদস্য মো. ওমর ফারুক এমন অভিযোগ করে বলেন, মিসফা পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। তাকে তিনদিন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শনিবার বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. ওমর ফারুকের কন্যা তাসফিয়া জান্নাত মিসফা জাকিরতবক ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রথম শ্রেনীর ছাত্রী। বুধবার রাতে ওই মাদ্রাসার কৃষি বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিনের কাছে প্রাইভেট পড়তেছিল। এ সময় মিসফা তার বড় বোন ফারজানা আফরিন সেফার সঙ্গে দুষ্টুমি করে একটি বইয়ের পাতা ছিড়ে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক নিজাম উদ্দিন শিশু মিফসাকে বেধরক মারধর করে। তার মারধরে মিসফা তার বিছানায় প্রস্রাব করে দেয়। এতে আরও ক্ষিপ্ত হন শিক্ষক। এক পর্যায় তিনি আবারো শিশুটিকে মারধর করে। পরে ওই শিশুকে দিয়ে তার বিছানার প্রস্রাব পরিষ্কার করে দুই ঘণ্টা পরে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শিশু মিসফাকে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে। হাসপাতালের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার মংফো শিশুটিকে চিকিৎসা দেয়। কিন্তু ঘটনার তিন দিনেও শিশুটি ব্যাথায় কাতরাচ্ছে এবং ভয়ে পরিবারের লোকজনের কাছে কথা বলছে না।
তিনি বলেন, শিশুটির মুখ ও পিঠেসহ শরীরে বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত লালচে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
শিশু তাসফিয়া জান্নাত মিসফার বড় বোন ফারজানা আরফিন সেফা বলেন, আমার একটি বইয়ের পাতা ছিড়ে ফেলায় স্যার মিসফাকে মারধর করেছে। স্যারের মারধরে মিসফা বিছানায় প্রস্রাব করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবারো মারধর করে।
মিসফার মা রাবেয়া আক্তার বলেন, মারধরের পর থেকে মেয়ে কারো সঙ্গে কথা বলছে না। গোমড়া হয়ে বসে থাকে। ব্যাথায় কাতরাচ্ছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করছি।
জাকিরতবক ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, দুষ্টমী করায় দু’একটি চর থাপ্পর মেরেছি।
জাকিরতবক ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। এটা নেহায়েত অন্যায়। এমন অন্যায় মেনে নেওয়া যায়না। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালতলী থানার ওসি কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা। তবে খোঁজ নিচ্ছি। এ ধরনের ঘটনা অমানবিক বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩
এসএম