নবাবগঞ্জ (ঢাক): এক সময়ে রাজধানী ঢাকায় স্থানীয়দের জন্য নদী পথই ছিল যাতায়াতের সহজ ব্যবস্থা। এর জন্য যাত্রীবাহী লঞ্চ ছিল একমাত্র যান।
শুকনো মৌসুমের আগেই নদীর পানি শুকিয়ে সমতল ভূমিতে পরিনত হয়ে পড়ে। ফলে কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হয়ে এ মৌসুমে সেখানে ধানের আবাদ শুরু করেন।
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী নদীর মাঝে শিকারীপাড়া ইউনিয়নের দাউদপুর এলাকায় দেখা মেলে এমন চিত্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দাউদপুর এলাকায় ইছামতী নদীর বুকে আবাদ হচ্ছে ইরি ও বোরো ধান।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মায় মিলিত হওয়া ইছামতী নদীর পানির স্রোতে আশপাশের বাড়ি ঘর ভেঙে নবাবগঞ্জের প্রতিটি অঞ্চল প্লাবিত হতো। ১৯৯৮ সালে এলাকাসীর দাবিতে আওয়ামী লীগ সরকার কাশিয়াখালি এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করে। এলাকাবাসীর দাবি মেনে বাঁধ নির্মাণ হলেও এ উপজেলায় এখন নানা সংকট দেখা দিচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে এলাকায় ফসলি জমিগুলোতে পানি না পাওয়ায় মাটির উর্বরতা কমে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। এক সময় এ নদীর মাছ ধরে জেলেরা জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন পানি না থাকায় তারা বেকার হয়ে পড়েছেন। কাশিয়াখালি বাঁধে একটি স্লুইসগেট দিয়ে নদীতে কিছু পানি আসলেও সেটি যথেষ্ট না। তবে নদীতে প্রতি বছর ড্রেজিং করা ও বাঁধে আরও দু-একটি স্লুইসগেট করলে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলার বারুয়াখালী নবগ্রাম এলাকার অমিত হালদার জানান, আগে তিনি বাবার সঙ্গে নদীতে মাছ ধরতে যেতেন। এখন নদীতে পানি না থাকায় অন্য কাজ করেন।
এছাড়া সুনিরাম হালদার, নিধন হালদার, নরেশ হালদারও একই কথা বলেন। তারা তাদের পুরোনো পেশায় ফিরে যেতে চান। তাদের দাবি, নদীটি খনন করা হলে আবারও নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
সেভ দ্যা সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টার্ম অ্যাওয়ারনস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মাল্লা বলেন, নদী চলমান অবস্থায এ পথ দিয়ে ব্যবসায়ীরা মালামাল আনা-নেওয়া করতেন। সেটি সাশ্রয়ে হওয়ায় ব্যবসায়ীরা লাভবান হতেন। তবে সোনাবাজু বেড়িবাঁধে প্রয়াজনীয় স্লুইসগেট নির্মাণ এবং নবাবগঞ্জ থেকে সোনাবাজু বেড়িবাঁধ পর্যন্ত খনন করা হলে ইছামতি নদী আবারও প্রাণ ফিরে পাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাহিদুজ্জামান বলেন, আমাদের নদীমাতৃক দেশে অসংখ্য নদীনালা আছে। কিন্তু এখন নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ার সেগুলো আগের রূপ হারিয়ে ফেলছে। আর সেই সুযোগে কৃষকরা সেখানে আবাদ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
এফআর