ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

অপহরণের পর টর্চারসেলে চালানো হতো নির্যাতন!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
অপহরণের পর টর্চারসেলে চালানো হতো নির্যাতন!

রাজশাহী: সহজ সরল মানুষদের অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকার জন্য টর্চারসেলে নিয়ে চালানো হতো নির্যাতন। এভাবেই মুক্তিপণ আদায় করে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি অপহরণকারী চক্র।



শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত থেকে শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে এ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এ সময় তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মহানগরীর হেতমখাঁ এলাকার ওই টর্চারসেলের সন্ধান পাওয়া যায়।   

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহানগর ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতার চারজন হলেন- বোয়ালিয়া থানার হেতেমখাঁ এলাকার জোয়াদুল আহাদ খানের ছেলে আরেফিন আহাদ খান সানি (৪২), মৃত আজাদ আলীর ছেলে মোস্তাক আহমেদ ফাহিম (২২), নুরুজ্জামানের ছেলে পারভেজ (২৭) ও মেহেরচন্ডী এলাকার আলম সরকারের ছেলে সাব্বির সরকার (২৫)।

পুলিশ জানায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা মহানগরীর লোকনাথ স্কুলের সামনের মার্কেট থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর হেতেমখাঁ এলাকার ওই টর্চারসেলে তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণের টাকার জন্য নির্যাতন চালানো হয়। এ সময় তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। অপহরণকারী এ চক্রের সদস্যরা জানান, দুই লাখ টাকা দিলে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে, না হলে প্রাণেই মেরে ফেলা হবে।  অপহরণের পরের দিন দেলোয়ার হোসেন ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সেখান থেকে ছাড়া পান। মুক্তির পর দেলোয়ার ডিবি পুলিশের কাছে পুরো অপহরণের ঘটনা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে মহানগর ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ওই চার সদস্যকে গ্রেফতার করে। অভিযানে গ্রেফতার আরেফিন আহাদ খান সানির বাড়ির ছাদে টর্চারসেলের খোঁজ পাওয়া যায়। পরে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) বিজয় বসাক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রথমে আরেফিন আহাদ খান সানিকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের উপ-কমিশনার আল মামুন জানান, এ চক্রটি বিভিন্ন সময় সহজ-সরল মানুষকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করতো। অভিযুক্ত সানির বাড়ির ছাদেই একটি টর্চারসেল রয়েছে। সেখানে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো চক্রের সদস্যরা। অপহরণের পর মুক্তিপণ ও চাঁদার টাকা আদায়ের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করা হতো। গ্রেফতার আসামিরা এ কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় শনিবার বোয়ালিয়া মডেল থানায় গ্রেফতার চারজনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার আল মামুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
এসএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।