ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

টিকটক তারকা বানানোর প্রলোভনে কিশোরীকে ভারতে পাচারের পর হত্যা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
টিকটক তারকা বানানোর প্রলোভনে কিশোরীকে ভারতে পাচারের পর হত্যা

খুলনা: টিকটক তারকা বানানো ও বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী টুম্পাকে (১৭) পাচার করা হয় ভারতের গুজরাটে। এরপর তাকে আটকে রেখে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করা হয়।

পরে সেই কিশোরী পালানোর চেষ্টা করলে তাকে হত্যা করা হয়।

এ হত্যার অভিযোগে নারীসহ তিন জনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৬)। আটক আসামিরা হলেন- আলী হোসেন (২০), মো. আল আমিন (১৯) ও কুলসুম বেগম (৪৫)।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র‍্যাব কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাব-৬ খুলনার অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মোসতাক আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

র‍্যাব জানায়, ভারতে বসবাসরত যশোর অভয়নগরের নবাব ও পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার বৃষ্টি পরস্পর স্বামী-স্ত্রী এবং তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভারতে মানবপাচারকারী চক্রের মূলহোতা। তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাদের চক্রের সদস্যদের সাহায্যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভারতে পাচার এবং বিক্রি করে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেন। এ চক্রের সক্রিয় সদস্য বৃষ্টির মা কুলসুম এবং ভাই আল আমিন খুলনার সদর থানা এলাকায় দীর্ঘদিন বসবাস করে মানবপাচারে তার মেয়ে এবং জামাইকে সহযোগিতা করে আসছেন।

ভিকটিম টুম্পা তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকার ডেমরা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। আসামিরা আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে, টিকটক সেলিব্রেটি বানিয়ে দেওয়া ও বিদেশে চাকরি দেওয়ার নাম করে পাচারকারী বৃষ্টি এবং নবাবের পরিকল্পনায় ভিকটিমকে ঢাকা থেকে খুলনায় নিয়ে আসেন। এরপর বৃষ্টির মা কুলসুমের বাসায় ভিকটিমকে তিন দিন রাখা হয়। পরে তাকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার করা হয়।

ভারতে একটি বাসায় ভিকটিমকে আটকে রেখে এনআইডি কার্ড ও আধার কার্ড তৈরি করে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করাতো। এরপর বৃষ্টি এবং নবাবের নির্দেশে আলী হোসেনের জিম্মায় অনৈতিক কাজ করার জন্য ভিকটিমকে দুই মাস আটকে রাখা হয়েছিল এবং জোরপূর্বক ভিকটিমের সঙ্গে আলী হোসেনের টিকটক ভিডিও বানানো হতো, পাশাপাশি ভিকটিমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো।

পরবর্তীতে ভিকটিম পাচারকারীদের সব গোপন তথ্য জেনে যায় এবং তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে দেশে আসার চেষ্টা করে। বিষয়টি জানতে পেরে ভিকটিমকে হত্যা করা করা হয়।

গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের গুজরাট পুলিশ ফোন করে ভিকটিমের বাবাকে জানায় যে, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে অন্য একটি ফোনের মাধ্যমে ভিকটিমের বাবাকে জানানো হয় আসামি আলী হোসেন তার মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন।

এ বিষয়ে ভিকটিমের বাবা র‍্যাবের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। র‍্যাব তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামিদের শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) নড়াইল ও খুলনা থেকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকার ডেমরা থানায় হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
এমআরএম/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।