কক্সবাজার: উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে রোববারের (৫ মার্চ) আগুনে দুই হাজার ঘর পুড়ে গেছে। এ অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন পার করছে অন্তত ১২ হাজার রোহিঙ্গা।
সোমবার (৬ মার্চ) কক্সবাজার জেলা প্রশাসন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. আবু সুফিয়ান। তার সঙ্গে তদন্ত কাজ করবেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিস, এপিবিএন, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা।
এডিএম আবু সুফিয়ান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ থেকেই কমিটি আগুনের কারণ বের করতে কাজ শুরু করেছে। তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
এদিকে, আগুনে ঘর পুড়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম আশ্রয়হীন রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী ঘর তৈরি করবে। জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা ডব্লিউএফপি রোহিঙ্গাদের জরুরি খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। আগুনের ঘটনায় প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ কিংবা হতাহতের কোনো ঘটনা নেই বলেও তিনি জানান।
মিজানুর রহমান আরও জানিয়েছেন, আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছে পাঁচটি মেডিকেল টিম। ৯০ জন কমিউনিটি হেলথ কর্মীর মাধ্যমে এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আগুনের ঘটনা তদন্তে সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, এপিবিএনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। এ সময় ক্যাম্পে আগুনের ঘটনাটি পরিকল্পিত ও নাশকতা বলে দাবি করে রোহিঙ্গারা। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হয়েছে।
কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসনের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা জানিয়েছেন, কমিটির অনুসন্ধান ও তদন্তের পর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। তবে আমরা জেনেছি, ১১ নম্বর ক্যাম্পে লাগা আগুন পাশের ৯ ও ১০ নম্বর ক্যাম্পে ছড়িয়ে দুই হাজার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১২ হাজার রোহিঙ্গা খোলা আকাশের নিচে দিন পার করছে। পুড়ে যাওয়া ঘরের মধ্যে ৩৫টি মসজিদ-মক্তব, দুটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, একটি হেল্প পোস্ট, একটি যুব কেন্দ্র, একটি নারীবান্ধব কেন্দ্র, একটি শিক্ষা কেন্দ্র, শিশুবান্ধব কেন্দ্র একটি ও একটি মানসিক পরিচর্যা কেন্দ্র পুড়ে গেছে। আগুনে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
উল্লেখ্য, রোববার বিকেল ৩টার দিকে বালুখালীর ১১ নম্বর ক্যাম্পে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৭ ইউনিট তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে ২০২১ সালের ২২ মার্চ একই ক্যাম্পে বিরাট আগুনের ঘটনা ঘটে। সে সময় ১১ রোহিঙ্গা নিহত ও ৫ শতাধিক আহত হয়। পুড়ে গিয়ে ছিল ৯ হাজারের বেশি ঘর।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২৩
এসবি/এমজে