ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

র‌্যাবের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা, গ্রেফতার ৬ 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৩
র‌্যাবের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা, গ্রেফতার ৬ 

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ইউনিয়নের বরগাঁও চেয়ারম্যান পাড়া এলাকায় গ্রামবাসীর সঙ্গে হট্টগোলের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে র‌্যাব।

শনিবার (১৮ মার্চ) রাতে র‌্যাব -১১ বিজেও সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. নাসিরউদ্দিন বাদি হয়ে ২১ জনের নামসহ ৭০-৮০জনকে অজ্ঞাত আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন।

 

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে গার্মেন্ট কর্মী রোজিনা হত্যা মামলার আসামি আব্দুস সেলিমকে। এ মামলায় ইতোমধ্যে র‌্যাবের গুলিতে নিহত আবুল কাশেমের ছেলে নজরুল ইসলামসহ ৬ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার (১৮৯ মার্চ) আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।  

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বরগাঁও গ্রামের আমীর আলীর ছেলে সেলিম মিয়া, আব্দুল বাতেনের ছেলে রুবেল, মৃত ইমান আলীর ছেলে হযরত আলী, আব্দুল মোতালেবের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন, আবুল কাশেমের ছেলে নজরুল ইসলাম, মৃত মালেকের ছেলে আমানউল্লাহ।

তবে  আব্দুস সেলিমকে দুটি মামলা গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ।  

তিনি বলেন, র‌্যাবের ওপর হামলা ঘটনায় ২১ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে র‌্যাব। এদের মধ্যে ৬জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাছাড়া গার্মেন্ট কর্মী রোজিনা হত্যা মামলায় সেলিম ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়েছে।  

জানা গেছে, গ্রেফতার ৫ জনসহ আব্দুস সেলিমকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সানজিদা সুরাইয়ার আদালতে হাজির করা হলে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি।  

এদিকে র‌্যাবের গুলিতে নিহত আবুল কাশেমের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। তার জানাজা শেষে স্থানীয় সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। আবুল কাশেম গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় কেউ সোনারগাঁ থানায় মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেননি।

মামলায় র‍্যাব উল্লেখ করে, সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ইউনিয়নের বারগাঁও এলাকায় রোজিনা নামের এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার হয় শুক্রবার। এ ঘটনার প্রধান আসামি সেলিমকে গ্রেফতার করতে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। আসামিকে গ্রেফতার করে ফেরার পথে র‌্যাবের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে র‌্যাব তাতে বাধা দেয়। এসময় তারা দেশীয় অস্ত্র রামদা, রড, ছোরা, বাঁশের লাঠি নিয়ে র‌্যাবের ওপর হামলা চালায়।  

এসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছুড়তে থাকে আসামিরা। আগ্নোয়াস্ত্রের ছোড়া গুলিতে এক ব্যক্তি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ওই এলাকার এতে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে।  

পরে আসামি সেলিম মিয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাব -১১ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রামবাসীর হামলায় ৪জন র‌্যাব সদস্য আহত হয়। আহতদের পিলখানা হাসপাতালে ভর্তি করা  হয়। হামলার ঘটনায় ৬জনকে গ্রেফতার করে থানায় হস্তান্তর করা হয়।

অপরদিকে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে র‌্যাবের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে র‌্যাব সদস্যরা ২১ জনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের যাচাই বাছাইয়ের পর ১৫ জনকে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয়।  

তারা রাত ৮ টার দিকে যার যার বাড়িতে পৌঁছান। তবে আটকদের ছাড়িয়ে নিতে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কায়সার আদমজী র‌্যাব কার্যালয়ে যান। এমপির অনুরোধে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় এমন ১৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মুক্তি পাওয়া মো. রাব্বী মিয়া জানান, আটক করার পর তাদের কোনো মারধর করা হয়নি। সাবেক সংসদ সদস্য কায়সার গিয়ে তাদের ছাড়িয়ে আনেন।

র‌্যাবের গুলিতে নিহত আবুল কাশেমের স্ত্রী রমিজা বেগম বলেন, র‌্যাবের লোকজন আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে আমার ছেলে র‌্যাবের ওপর হামলা করেছে অভিযোগ তুলে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছে। এ দুনিয়াতে মনে হয় বিচার নাই। আল্লায় আখেরাতে বিচার করব।

গত শুক্রবার দিবাগত রাতে র‌্যাব পরিচয়ে সাদা পোশাকে হত্যা মামলা আসামি গ্রেফতার করতে গিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে হট্টগোল ঘটে। এসময় র‌্যাবের গুলিতে আবুল কাশেম নামে এক বৃদ্ধ মারা যান। এ ঘটনায় হুমায়ুন কবির, জহিরুল ইসলাম, দ্বীন ইসলাম, কিশোর সাইফুল ইসলাম ও মাহফুজ মিয়া আহত হন। এছাড়াও গ্রামবাসীর হামলায় র‌্যাবের ৪ সদস্য আহত হয়েছেন। র‌্যাবের সদস্যদের পিলখানা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৪৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২৩
এমআরপি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।