ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘২৫ মার্চের গণহত্যার বিশ্ব স্বীকৃতির প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৩
‘২৫ মার্চের গণহত্যার বিশ্ব স্বীকৃতির প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে’

ঢাকা: ২৫ মার্চ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অডিটোরিয়ামে গণহত্যার স্মরণে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের গণহত্যা ১৯৭১’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব জনমত আমাদের পক্ষে ছিল বলে আমরা নয় মাসে দেশ স্বাধীন করতে পেরেছি। সে যুদ্ধে আমাদের নারী পুরুষ, শিশু বৃদ্ধ এবং বেসামরিক লোকজন যারা যুদ্ধে অংশ নেয়নি, তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। যুদ্ধ ক্ষেত্রে এক সৈনিক আরেক সৈনিককে মারে কিন্তু আমাদের দেশে সাধারণ নাগরিক এমনকি নারী শিশু এবং বৃদ্ধদেরকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। তারা (পাকিস্তানি) বলেছিল, মানুষ চাইনা, শুধু মাটি চাই।

তিনি আরও বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে এক রকম, তারা যখন যুদ্ধ করে তখন এক রকম সিদ্ধান্ত অন্যরা করলে আরেক রকম। ইরাকে বেলায় এক রকম, আবার আফগানিস্তানের বেলায় আরেক রকম। সাদ্দামের বেলায় এক নীতি, আবার ওনাদের বেলায় অন্য নীতি। সেই কারণে ২৫ মার্চের স্বীকৃতি আমরা না পেলেও আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেখ হাসিনার নির্দেশে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরাও সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আখ্যায়িত করেছি। জাতীয়ভাবে এটা আমরা এখন পালন করছি। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।     

অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, এশিয়া জাস্টিস অ্যান্ড রাইটসের প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার প্যাট্রিক বার্জেস।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর (প্রেসিডিয়াম) সদস্য শাহজাহান খান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা যে কোনো কারণেই হোক ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে অনেক রাষ্ট্রই সমর্থন দিয়েছিল। সেই রাষ্ট্রগুলো এখন পৃথিবীব্যাপী গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য খুব শক্ত এবং জোরালোভাবে অনেক রাষ্ট্রকে তাগাদা দিয়ে থাকেন, সেই রাষ্ট্রগুলো আমরা না চাইলেও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয়ে কথা বলেন। কিন্তু আমরা তাকিয়ে থাকব এই গণহত্যা দিবসে তারা কী বলছেন? তারা বাংলাদেশের পাশে মিয়ানমারে ঘটনাকে গণহত্যা উপাধি দিয়েছেন ইতোমধ্যে। কিন্তু যেখানে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছিল, যেখানে সেই দেশের (পাকিস্তান) সরকার প্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মিলিটারি জেনারেল, পাকিস্তানের জনগণের কথোপকথনগুলো লিপিবদ্ধ রয়েছে। যেগুলো প্রকাশ্য দিবালোকের মতো সত্য, সেই সত্যকে পাশ কাটিয়ে সমসাময়িক বিশ্বে শান্তি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা কোনো কিছুই সম্ভব নয়, যদি না আমাদের ঐতিহাসিক অবস্থানগুলোকে আমরা স্বীকার করে না নেই। এই বিষয়গুলো স্বীকার করলে কোনো রাষ্ট্র ছোট হবে না। বর্তমান বিশ্বে বিবাদমান একাধিক রাষ্ট্র এক অর্থে বলতে গেলে গণহত্যার পক্ষেই ছিল। কারণ তারা অব্যাহতভাবে পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ করে গেছে। ইয়াহিয়া, টিক্কা খানকে তাদের বর্বরতা থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।

শাহজাহান খান বলেন, আমরা জাতীয়ভাবে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। যে কারণে এখন প্রতিবছর ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশের গণহত্যা পৃথিবীর বহু দেশের গণহত্যাকে ম্লান করে দিয়েছে। মাত্র নয় মাসে ৩০ লাখ মানুষের আত্মদানের ইতিহাস খুব কম আছে, সুতরাং আমরা বিশ্বাস করি আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটির স্বীকৃতি আদায় করতে পারব।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৩
আরকেআর/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।