ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘আগের মতো পহেলা বৈশাখ এখন আর দেখা যায় না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৩
‘আগের মতো পহেলা বৈশাখ এখন আর দেখা যায় না’

ঢাকা: দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে কাচের চুড়ি বিক্রি করছেন বৃদ্ধা নারী মর্জিনা বেগম (৬০)। বিগত চার থেকে পাঁচ বছর যাবত হাতির ঝিলের বিভিন্ন প্রবেশ পয়েন্টে কাচের চুড়ি  বিক্রি করেন তিনি।

 

বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে মর্জিনা বেগমের ব্যবসায় অন্য সময়ের তুলনায় ভারোই হতো। তবে করোনার পর থেকে বিনোদন স্থান হিসেবে পরিচিত হাতিরঝিলে আগের মতো দর্শনার্থীদের ভিড় তেমন একটা দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন এই বৃদ্ধা।  

যে কারণে সাধারণ দিন তো বটেই বিশেষ উৎসবের দিনগুলোতেও তার চুড়ি বিক্রি বর্তমানে তেমন একটা হয় না।  

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সরেজমিনে রাজধানীর বিনোদন স্থান হিসেবে পরিচিত হাতির ঝিলে ঘুরে দেখা যায়, দর্শনার্থীদের ভিড় তেমন একটা নেই। পহেলা বৈশাখের কোনো আমেজ নেই এখানে।  

নববর্ষে ফাঁকা হাতির ঝিল

মর্জিনা বেগমের মতো কয়েকজন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা বাঙালির ঐতিহ্যের বিভিন্ন উপকরণ যেমন কাচের চুড়ি, ডুডডুগি- ঢোল এবং বাহারি রঙের ফুল বিক্রির আশায় হাতির ঝিলে এসেছেন। কিন্তু দর্শনার্থী না থাকায় এসকল ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের মতো মর্জিনা বেগমের আশা আর বাস্তবে রূপ নেয়নি।  

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই জীবনযুদ্ধে টুকটাক এ কাচের রেশমি চুড়ি বিক্রি করে এক প্রকার কষ্টে জীবন পাড় করছেন এই বৃদ্ধা। ভিক্ষাবৃত্তির চেয়ে নিজের কষ্টে উপার্জিত আয় দিয়ে জীবন পরিচালনা করতে পছন্দ করেন তিনি। যে কারণে রোজার দিনে এই কাটফাঁটা রোদেও রাস্তার পাশে বসে কাচের চুড়ি বিক্রি করছেন তিনি।  

আগে পহেলা বৈশাখে নগরীর বিভিন্ন স্থানে মেলাসহ নানা আয়োজনে পালন করা হলেও এখন শুধু সকালে শাহাবাগ ছাড়া আর কোথাও তেমন আয়োজন দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন এই বৃদ্ধা নারী।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা শহরে বিভিন্ন স্থানে ৩০ বছর যাবত ব্যবসা করছি। আগের মতো পহেলা বৈশাখ এখন আর দেখা যায় না। আগে বৈশাখে সারাদিন মানুষের ভিড় জমে থাকত। কিন্তু আজ সকাল থেকে তেমন কোনো লোকই নেই। রোজা এবং প্রচণ্ড গরমের কারণে হয় তো মানুষ ঘর থেকে বের হয় নাই।

তিন ছেলে থাকা সত্ত্বেও রাজধানীর রামপুরার উলনে একাই থাকেন এই বৃদ্ধা। কারণ হিসেবে জানালেন, ছেলেদের রোজগার খাবার মতো ভাগ্য তার নেই। ছেলেরা পরিবার পরিজন নিয়ে ভালেই আছে।  

কিছুটা অভিমান নিয়ে এই বৃদ্ধা মর্জিনা বেগম বলেন, এই বয়সে আমার থাকার মতো যায়গা হলেই হবে। কাচের চুড়ি বিক্রি করে বাকি জীবনটা এভাবেই পার করতে চাই।  

নতুন বছরে সবাই যেন ভারো এবং সুস্থ থাকে এই প্রত্যাশা মর্জিনা বেগমের।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৩
ইএসএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।