কক্সবাজার: পবিত্র রমজানের প্রায় একমাসের খরা কাটিয়ে ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটকের সমাগমের অপেক্ষায় বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজার।
পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে এখানকার হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো সাজানো হচ্ছে নান্দনিকভাবে।
কর্মব্যস্ত জীবনের অবসাদ দূর করতে দেশের মানুষের বেড়ানোর পছন্দের জায়গা, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। বিশেষ দিন ও টানা ছুটিতে এখানকার পাহাড়-সমুদ্র, নদী ও ঝরণা দেখতে ভিড় করেন পর্যটকরা।
এ বছর রমজান মাসেই পড়েছে মহান স্বাধাীনতা দিবস ও পহেলা বৈশাখ। যে কারণে এই দুই বিশেষ দিনেও পর্যটকের দেখা মেলেনি এখানে। এমনকি তারকামানের হোটেল ও রিসোর্টগুলোতেও কক্ষ ভাড়ায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হলেও, পর্যটকদের সাড়া মেলেনি।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে পুরো সপ্তাহ পর্যটকে ভরপুর থাকে। তখন হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে কক্ষ সংকটও দেখা দেয়। এ বছরও এই সময়ে লাখো পর্যটকের সমাগম হবে কক্সবাজারে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার শহরের সৈকত তীরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোন, প্রধান সড়ক ও মেরিন ড্রাইভে প্রায় ৫০০ হোটেল, গেস্ট হাউস, কটেজ ও রিসোর্ট রয়েছে। যেখানে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টি খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ আছে।
বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ও মালিক হোটেল-রেস্তোরাঁর সংস্কার ও সৌন্দর্য্যবর্ধনের কাজে ব্যস্ত এখন।
সুগন্ধা পয়েন্টের সাগর পাড়ে সেইলর ইকো বিচ রিসোর্টের পরিচালক বেলাল আবেদীন ভুট্টো বলেন, এ রিসোর্টে ১২টি কক্ষ রয়েছে। একটি কক্ষের সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ হাজার ৫০০ থেকে শুরু করে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। এবারের ঈদে কক্ষ ভাড়ায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় রয়েছে তাদের।
পর্যটন ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম তোহা বলেন, ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটক সমাগমের আশা করা হচ্ছে। পর্যটকদের বরণে সেভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছে সবাই। তবে ঈদ পর্যন্ত তীব্র তাপপ্রবাহ থাকলে আশানুরূপ পর্যটক নাও আসতে পারেন, এমন শঙ্কাও রয়েছে।
তারকামানের হোটেল কক্স-টুডের আবু তালেব শাহ বলেন, রমজানে কক্ষ ভাড়ায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছিল। ঈদেও ভ্রমণে পর্যটকদের উৎসাহিত করতে আকর্ষণীয় ছাড় রয়েছে।
একইভাবে শহরের অভিজাত হোটেল ওশান প্যারাডাইস, সায়মন বিচ, সি-গাল, সি প্যালেস, লং বিচ, কল্লো, মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন হোটেল, গেস্ট হাউস, কটেজ ও রিসোর্টে ঈদের ছুটিতে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড় রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজার হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিকদের সংগঠনের সমন্বিত মোর্চা ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, রমজান মাসে বিশেষ ছুটিতে পর্যটক আসেনি। এখন সবাই ঈদের ছুটিতে পর্যটক সমাগমের আশা করছেন।
তিনি এসময় ভ্রমণপিপাসুদের অনলাইনে হোটেল বুকিং দেওয়ার পরামর্শ দেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটদের ভ্রমণ আনন্দময় করে তুলতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সেদিকে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে জেলা প্রশাসনের। পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
আমাদের লক্ষ্য থাকবে কোনো পর্যটক যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, বলেন এডিএম।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২৩
এসবি/এনএস