ঢাকা: রমজান মাসের শুরুর দিকে বিপনিবিতানগুলোয় ক্রেতা সংকট থাকলেও শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকী, ফলে বিপনীবিতান থেকে শুরু করে রাস্তার ধরে বেচা-কেনার ধুম পড়েছে।
শুক্রবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরের একাধিক বিপনিবিতান ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের হতাশার কথা জানা যায়।
বেচা-বিক্রি নিয়ে ব্যবসায়ীরা হতাশা প্রকাশ করলেও ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পণ্যের দাম নিয়ে। তাদের দাবি, সব ধরনের পণ্যের দামেই দ্বিগুণ বেড়েছে। ফলে তাদের ঈদের কেনাকাটার যে বাজেট, তাতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
মিরপুরের কাঁচামাল বিক্রেতা ফরিদ মিয়া পরিবার নিয়ে মিরপুর শপিং কমপ্লেক্সে এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। অনেক ঘোরাঘুরি করেও পছন্দের পণ্য কিনতে পারছেন না তারা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, যে পণ্যগুলো পছন্দ হচ্ছে সেগুলো কিনতে পারছি না। অনেক সময় ধরে ঘুরাঘুরি করছি বাজেটে মিলছে না। গতবছরের তুলনায় পোশাকের দামটা অনেক বেশি।
গত বছরের তুলনায় পোশাকের দাম বেশি, বিষয়টি স্বীকার করে মিরপুর হোপ মার্কেটের ফ্যাশন ওয়ার্ল্ডের পোশাক বিক্রেতা মো. শাহ আলম বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে প্রভাব পড়েছে। প্রতিটি পোশাক আমাদের ১০০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তি দাম দিয়ে আনতে হচ্ছে। বাড়তি দাম দিয়ে এনে কমমূল্যে বিক্রি করার সুযোগ নেই। তবে সব ধরণের পোশাকের দাম বাড়ার কারণে গতবছরের তুলনায় এবারের ঈদে বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে।
গত বছর ১৫ রোজা পর থেকে প্রতিদিন শতাধিক সেট জামা বিক্রি করেছি। এ বছর একদিন ১০০ সেট জামা বিক্রি করতে পেরেছি। অন্যান্য দিন কখনও ৫০, কখনও ৬০ সেট। আমরা এবারের বিক্রি নিয়ে হতাশ।
দীর্ঘদিন ধরে লেডিস পোশাক বিক্রি করেছেন সানুয়ারা ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখানে সব সময় বেচাকেনা ভালো হয়। ঈদ এলে বিক্রি অনেক বেড়ে যায়। তবে এই বছর আশানুরূপ বিক্রি হয়নি। গতবারের ঈদের চেয়ে বিক্রি অনেক কম বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শুধু বিপণিবিতানগুলোয় নয় রাজধানী ফুটপাতেও এবারের রমজান মাসে বেচাকেনা কমেছে। ফুটপাত ব্যবসায়ীরাও এবারের ঈদে বিক্রি অনেকটাই কমেছে বলে জানিয়েছেন। তারা বলেন, পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বিক্রি অনেকাংশে কমেছে। এছাড়া প্রচুর লোক এখন পার্শ্ববর্তী দেশে গিয়ে ঈদের শপিং করে। ফলে তাদের বিক্রি তেমন হয় না।
সরেজমিনে ফুটপাতের দোকানগুলোয় ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছেন। নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সীরা তাদের পছন্দের পণ্য কিনতে এসেছেন। শুক্রবার সৌদি আরবে ঈদের ঘোষণার পর সকাল ১০টা থেকে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দোকানিরা বলছেন, সারা রাত ক্রেতাদের উপস্থিতি থাকলে তাদের অল্প কিছু আয় থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৩
এসএমএকে/এমজে