ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তিন ফসলি জমির মাটি জোর করে কেটে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায়!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৩
তিন ফসলি জমির মাটি জোর করে  কেটে নেওয়া হচ্ছে ইটভাটায়!

বরগুনা: বরগুনার আমতলীতে ব্যক্তিমালিকানাধীন তিন ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিবিসিকো নামে একটি ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে।

রোববার (২৩ এপ্রিল) উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের রায়বালা গ্রামে দিনে ও রাতে বিবিসিকো রায়বালা মৌজার ২৩৯ নং দাগের পক্ষি বিবির মালিকানাধীন ২০০ শতাংশ জমির মধ্য থেকে ২০ শতাংশ তিন ফসলি সরল জমির মাটি কেটে নিয়ে গেছে পাশের ইটভাটার লোকজন।

বিষয়টি জমির মালিক পক্ষি বিবির ছেলে মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান আমতলী থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করে দেয়।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) সকালে একই মৌজায় রায়বালা হাতেমিয়া নূরাণী হাফিজিয়া মাদরাসার ২৩৯ নং দাগ থেকে ৬০ শতাংশ জমির মধ্য থেকে ৪ শতাংশ জমির মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। তার আগে নসু শিকদারের ২৪১ নং দাগের ৭০ শতাংশ জমির মধ্য থেকে ২০ শতাংশ জমির মাটি জোরপূর্বক কেটে নেওয়া হয়েছে। মালিকরা বাঁধা দিলেও তা অগ্রাজ্য করে এসব জমির মাটি কেটে ইট ভাটায় নিয়ে যায়। জমির মধ্যখানে ১২ থেকে ১৪ ফুট গভীর করে মাটি কাটার ফলে পাশের জমিগুলোও ভেঙে যাচ্ছে।  

ক্ষতিগ্রস্তরা ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শুধু রাতে না, দিন-দুপুরেও কৃষি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নিচ্ছে এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু আ. হান্নান মৃধা। প্রতিবাদ করলে মারধর ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে তাদের।
 
ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক পক্ষি বিবির ছেলে মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, আমাদের ফসলি জমির মাটি বিবিসিকো ইটভাটার মালিক আ. হান্নান মৃধা জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে গেছে। আমি পুলিশ এনে মাটি কাটা বন্ধ করেছি।

গ্রামের বাসিন্দা ধলা মিয়া হাওলাদার বলেন,তিন ফসলি জমি থেকে জোর করে মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে দিন দিন ফসলি জমি কমে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভ্যাকু চালক জানান, ওই জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ ট্রলি মাটি নিতে পারছেন। মাটি কাটার বিষয়ে তিনি জানান, ইটভাটার মালিকের কথায় তিনি ফসলি জমি থেকে মাটি কাটছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহমেদ মাসুম তালুকদার বলেন, জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

অভিযুক্ত বিবিসিকো ইটভাটার মালিক আ. হান্নান মৃধা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো জমির মাটি জোরপূর্বক কাটিনি। আমার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জমির মাটি কেটেছি।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান বলেন, জোরপূর্বক ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ পাঠিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করে দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম মুঠোফোনে বলেন, ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৩
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।