ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আমি নিরাপত্তাহীন: মেয়র আরিফ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২৩
আমি নিরাপত্তাহীন: মেয়র আরিফ সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী

সিলেট: সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। সর্বশেষ না জানিয়ে রাতের আঁধারে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের সরিয়ে নেওয়ায় নিজের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১৬ মে) রাতে ব্যক্তিগত ও বাসভবনের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া এমন শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

এ নিয়ে বুধবার (১৭ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দাবি করেন, তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চলছে।

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আমিতো জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি। তাকে প্রধানমন্ত্রী শপথ করিয়ে মেয়রের চেয়ারে বসিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের অতি উৎসাহী কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা এমন একজন জনপ্রতিনিধিকে কীভাবে মূল্যায়ন করতে হয় সেটিও সম্ভবত ভুলে গেছেন। সম্প্রতি তিনি মহানগরের যেখানে যাচ্ছেন, তার সঙ্গে যারা ছবি তুলছেন, রাতের বেলায় তাদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কাউকে রিমান্ডে পর্যন্ত নিচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৬ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বাসায় নিয়োজিত ৬ আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করে নেন সিলেটে নতুন যোগদানকৃত আনসার ও ভিডিপি কমান্ডার।

আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আনসার সদস্যদের প্রত্যাহার করার বিষয়টি তাকে লিখিত বা মৌখিক—কোনোভাবেই জানানো হয়নি। অথচ গত ৬ বছর ধরে আনসার বাহিনীর ২৪ জন সদস্যকে রাজস্ব থেকে বেতনের বিনিময়ে নগরভবন ও মেয়রের বাসার অফিসসহ সিসিকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তায় রাখা হয়।

কিন্তু রাতে হঠাৎ মেয়রের বাসা ও বাসা সংলগ্ন অফিসের নিরাপত্তায় থাকা ৬ জন আনসার সদস্যকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করা হয়।

তিনি সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, প্রথম মেয়াদে থাকাকালে সরকার আমাকে দুইজন গানম্যান দেয়। পরের মেয়াদে তাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর নগরবাসীর ট্যাক্সের টাকায় মাসিক চুক্তিতে আনসার বাহিনীর ২৪ জন সদস্যকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা হয়। শিডিউল করে সিসিকের পানি শোধনাগার ও যান্ত্রিক শাখাসহ (যেখানে সিসিকের বিভিন্ন গাড়ি ও মেশিন রাখা হয়) গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা দিয়ে আসছেন তারা। তাদের মধ্যে থেকে ছয়জনকে আমার বাসা ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আমি সিসিকের সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তি। সিসিক মানেইতো মেয়র। আমার ওপর কি এখানে আর কেউ আছে? সিসিক আনসার নিয়োগ দিলে মেয়রের বাসা সংলগ্ন কার্যালয়ে এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দেওয়া কর্তব্যের বাইরে নয়।

তার মতে, আমার বাসার নিরাপত্তা-সদস্যদের কিন্তু সরকারের নির্দেশনায় প্রত্যাহার করা হয়নি। এ বাহিনীর পক্ষ থেকে এটা অতি উৎসাহী  হয়ে করা হয়েছে। প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার অতি উৎসাহী মনোভাব সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলছে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমার বাসায় যদি নিরাপত্তা দেওয়া আইনসিদ্ধ না হয়, তবে দীর্ঘ ৬ বছর তারা কোথায় ছিলেন? আমি দেখছি—আমার নগরবাসী থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি নগরবাসীর কাছে দোয়া চাই।

সংবাদ সম্মেলনে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ভবনের দেওয়ালে ফাটল ও বিভিন্ন ত্রুটির বিষয়টি তুলে ধরে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, দেয়ালে ফাটল ধরা পড়ার পরই সিসিকের উদ্যোগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী টার্মিনাল ভবনের নকশায় ত্রুটি রয়েছে। নকশাটি করেছিলো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিট্যাক্ট বিভাগ এবং এসজিএমপি। তাদের বিষয়টি অবগত করা হয়েছে এবং ত্রুটি মেরামতের লক্ষে নকশাটি সংশোধন করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২৩
এনইউ/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।