ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফলন ভালো হলেও ঝড় আতঙ্কে ঠাকুরগাঁওয়ের লিচু ব্যবসায়ীরা

শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
ফলন ভালো হলেও ঝড় আতঙ্কে ঠাকুরগাঁওয়ের লিচু ব্যবসায়ীরা ছবি- শরিফুল ইসলাম

ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ের প্রায় সব উপজেলাতেই রয়েছে লিচুর বড় বড় বাগান। এসব বাগানে ফলন এবারে আশানুরূপ হলেও, কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতির আশঙ্কায় আতঙ্কে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

 

গাছ থেকে লিচু পাড়তে আরও ১৫/২০ দিন সময় লাগবে। কিন্তু এর মধ্যে যদি ঝড় হয়, তাহলে লিচু ঝরে পড়বে। এতে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ব্যবসায়ীরা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মুন্সিরহাট, আকচা, নারগুনের কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, তীব্র রোদের কারণে অনেক লিচুতে ক্ষত দাগ হয়েছে। কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কা থাকলেও লিচু পরিপক্ক করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। প্রতিটি গাছের নিচে দেওয়া হচ্ছে সার ও সেচ। ১৫/২০ দিনের মধ্যে এসব বাগানের লিচু পরিপক্ক হবে এবং বাজারজাত করা সম্ভব হবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

গত বছরের চেয়ে এবারে সার, সেচ ও শ্রমিকের মজুরির দাম বাড়ায় চিন্তিত লিচু ব্যবসায়ীরা। তবে কালবৈশাখী ঝড় হানা না দিলে, গতবারের লোকসান পুষিয়ে লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তারা।

লিচু বাগানের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর ঠাকুরগাওয়ের লিচু দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। লিচুর ব্যবসা লাভজনক হওয়ায়, প্রতিবছরই লিচু চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, লিচুর ভালো ফলন হয় বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

ঠাকুরগাও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শতাধিক বাগানে দেশি পাতি লিচু, কদমি লিচু, বোম্বাই লিচু, চায়না টু ও চায়না থ্রির বাগান রয়েছে। এরই মধ্যে কিছু কিছু বাগানের দেশি পাতি লিচু পাড়তে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। তীব্র গরম ও সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায়, অনেক গাছে মুকুল এলেও রোদে পুড়ে ও বাতাসে ঝরে গেছে বেশিরভাগ। তাই লিচু পড়া ও পোকামাকড় রোধে বালাইনাশক স্প্রে করে শেষ সময়ের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন লিচু চাষিরা।

চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে লিচুর ব্যবসা করি। এ বছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। যদিও খরায় অনেক লিচু ঝরে পড়েছে, তারপরও লাভ হবে বলে আশা করছি।

লিচু ব্যবসায়ী ইয়াসিন আলী জানান, তিনি ১০ বছর ধরে এই লিচু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এবার প্রায় ১৭ একর বাগান লিজ নিয়েছেন। বাগানগুলোতে পাতি লিচু, কদমি লিচু, চায়না টু এবং চায়না থ্রি জাতের লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকার পাইকাররা গাছের লিচু কিনছেন প্রতি হাজার ১৫০০ টাকা দরে।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ৬০ জন শ্রমিক কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের তিন বেলা খাবার ও পকেট খরচসহ শ্রমিকপ্রতি ৭০০-৮০০ টাকা দিতে হয়। নিয়মিত পরিচর্যা ও বালাইনাশক ওষুধ দিতে হয়। এ বছর খরচ বেশি হওয়ায়, লিচুর দামটাও একটু বেশি হবে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, গত বছর ২৫৬টি বাগানে ৯০৫ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৯৯৮ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হয়। এবারে উৎপাদন আরও বাড়বে বলে আশা করছে কৃষি অফিস।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।