চাঁদপুর: ভাগ্যের কি নির্মমতা, গর্ভধারিণী মায়ের নিথর দেহ পড়ে আছে নানাবাড়িতে। এদিকে কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় মগ্ন ছেলে শফিকুল ইসলাম অনিক।
ছেলেটি তখনও জানত না, তার প্রিয় মা আর বেঁচে নেই। চলে গেছেন না ফেরার দেশে। যে কারণে হাসিখুশি মনেই পরীক্ষা দিতে পেরেছে সে।
পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথেই দুঃসংবাদটি শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে অনিকের।
শনিবার (২৭ মে) ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায়।
সেখানের মোহাম্মদপুর গ্রামের মোল্লা বাড়ির কামাল হোসেনের ছেলে শফিকুল ইসলাম অনিক।
জগন্নাথপুর হাজী এরশাদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে সে। হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়েছে তার কেন্দ্র।
আজ ছিল তার পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা। অনিকের যখন পরীক্ষা চলছিল তখন তার না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। পরীক্ষা শেষে অনিকের জেঠাতো ভাই রুহুল কুদ্দুস দুলাল ও খালেকুজ্জামান শামীম তাকে নানাবাড়িতে নিতে হলের সামনে দাঁড়িয়ে। তখনও অনিকের জানা নেই, নানাবাড়িতে গিয়ে মা বলে ডাকার মধুর নাম চিরতরে হারিয়ে গেছে।
পরীক্ষা শেষে হল থেকে বের হয়েই বড় দুই ভাইকে দেখে তাদের আসার কারণ জানতে চায় অনিক। মায়ের মৃত্যুর খবর তার মুখের সব হাসি কেড়ে নেয়। নেমে আসে বিষাদের ছায়া।
অনিকের জেঠাতো ভাই খালেকুজ্জামান শামীম জানান, দীর্ঘদিন মরণব্যাধি ক্যান্সারে ভুগছিলেন অনিকের মা। রমজানের আগে চিকিৎসার জন্য চাঁদপুর সদরের রঘুনাথপুরে বাবার বাড়ি যান তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ক্যান্সারের কাছে হার মেনে শনিবার সকালে চিরকালের জন্য ঘুমিয়ে গেছেন তিনি। বিকালে জানাজা শেষে অনিকের নানার বাড়িতেই দাফন করা হবে।
পরীক্ষার্থীর মায়ের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল পাইলট হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাঈদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৩
এসএএইচ