ঢাকা: বাংলাদেশ এবং ভুটানের মধ্যকার স্বাক্ষরিত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য ও ট্রানজিট চুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে অগ্রণী পালনের জন্য ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
শুক্রবার (২৩ জুন) রাজধানীর গুলশানে শুটিং কমপ্লেক্সে ভুটান অ্যাম্বাসি আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ভুটান ২০২০ সালে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি-পিটিএ এবং চলতি বছরের ২২ মার্চ 'ট্রাফিক-ইন-ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এসব চুক্তি উভয় দেশের মধ্য বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে সহায়তা করবে। ব্যবসায়ীরা পিটিএ এবং ট্রানজিট চুক্তির সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশ ঘটাতে পারে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষা-স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও অবকাঠামোসহ আর্থ-সামাজিক খাতে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
আমরা এখন ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক যাত্রা শুরু করেছি উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য আঞ্চলিক একীকরণের ওপর জোর দিতে হবে। এজন্য নিকটতম প্রতিবেশীগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক একীকরণ, আঞ্চলিক সংযোগ এবং আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়ানোর পাশাপাশি পারস্পারিক আস্থা ও বিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে।
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক আঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছেন। যার মধ্যে অনেকগুলো চালু হয়েছে। এরই মধ্যে ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রদান করা হয়েছে। ভুটান সীমান্তের খুব কাছে কুড়িগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ সময় ব্যবসাবান্ধব এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার জন্য ভুটান সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ অঞ্চলে কানেক্টিভিটি হাব হিসেবে বিবেচিত। সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে দুটি বন্দরসহ রেল যোগাযোগ এবং ট্রানজিট সুবিধা ভুটানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখতে পারে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মেলা দুই দেশের ব্যবসা, উদ্যোক্তা এবং পরিষেবা প্রদানকারীদের নেটওয়ার্ক তৈরি এবং ব্যবসা ও বিনিয়গের সুযোগ অন্বেষণের জন্য একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা ছাড়াও বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিলসহ আবাসিক মিশন-দূতাবাসের প্রধান, ব্যবসায়িক চেয়ারপারসন এবং অন্যান্য ব্যবাসায়ী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ভুটানের প্রায় ২৫টি কোম্পানি মেলায় অংশগ্রহণ করেছে, যেখানে দেশটির তৈরি ও উৎপাদিত প্রিমিয়াম মানের পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। মেলা ২৩ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত চলবে। মেলার পাশাপাশি ভুটানে বিনিয়োগের সুযোগ বিশেষ করে কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থার ওপর একই ভেন্যুতে সেমিনারও অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০২৩
টিআর/জেএইচ