ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকায় কোরবানির পর মাংস নিয়ে গ্রামে ফিরছেন মানুষজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৯ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২৩
ঢাকায় কোরবানির পর মাংস নিয়ে গ্রামে ফিরছেন মানুষজন

ঢাকা: সারাদেশে উদযাপন হচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) ঈদের দিন সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো রাজধানী ঢাকায়ও থেমে থেমে বৃষ্টি ছিল। তবে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় শেষে যথারীতি পশু কোরবানি দেন মুসল্লিরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চলে কোরবানির মাংস কাটার কাজও। বৃষ্টির কারণে যদিও সকাল থেকে নামাজ ও কোরবানি দিতে বেগ পেতে হয়েছে সকলকেই।

এদিন পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস বণ্টন ও সংরক্ষণ পর্যন্ত অনেক ধাপে কাজ সম্পন্ন করতে হয়। রাজধানী ঢাকায় সকালে ঈদের নামাজ আদায় করে পশু কোরবানি দিয়েছেন অনেকে। ঢাকায় কোরবানিদাতাদের অনেকে দুপুরের পর পরিবার-পরিজনের জন্য মাংস নিয়ে রওনা হয়েছেন গ্রামের বাড়ির পথে। যাদের অনেকে প্রতিবছর কোরবানি করেন ঢাকায়, কিন্তু ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন গ্রামে থাকা পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে।

বিকেলে ঢাকার সড়কগুলোয় বিভিন্ন গন্তব্যমুখী বেশিরভাগ মানুষের হাতে দেখা গেছে কোরবানির মাংস। যাদের অনেকে ঢাকায় কোরবানি দিয়ে এখন মাংস নিয়ে গ্রামে যাচ্ছেন। তাদের কেউ কেউ মাংস সেদ্ধ করে, কেউবা কাঁচা মাংস প্যাকেট করে নিয়ে যাচ্ছেন।

বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় কথা হয় সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকায় কয়েকজন মিলে কোরবানি করেছি, আমি একটি ভাগ নিয়েছি। সেখান থেকে গরিব ও আত্মীয়দের মাঝে বিলিয়ে কিছু অংশ ঢাকায় স্ত্রী-সন্তানদের জন্য রেখেছি। বাকিটুকু গ্রামে থাকা মা ও ভাইয়ের জন্য নিয়ে যাচ্ছি। আমি প্রতি বছরই ঈদের দিন বাড়ি যাই।

ফয়সাল আলম নামে আরেক যাত্রী বলেন, ঈদের আগে অফিস ছুটি হয়েছিল একদম শেষ পর্যায়ে। তাই বৃষ্টির ভেতর আর বাড়ি যাওয়া হয়নি। সেজন্য ঢাকাতেই কয়েকজন বন্ধু মিলে কোরবানির কাজ সেরেছি। এখন আবহাওয়া একটু ভালো, তাই মাংস নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। সেখানে মা-বাবার সঙ্গেই ভাগ করে নেব ঈদের আনন্দ।

হাতিরপুল এলাকায় কথা হয় মৌসুমি কসাই চাঁদ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার বাড়ি মাদারীপুর। কোরবানির ঈদে দুই-তিনটা গরু কাটার কাজ নেই। তাই ঈদের দিন বিকেলে মাংস নিয়ে একবারে বাড়ি যাই। আজকে সকাল থেকে তাড়াতাড়ি কাজ করেছি। তিনটার মধ্যেই কাজ শেষ। এখন বাড়ি যাই, সবাইকে নিয়া কোরবানির মাংস খাব।

স্বপন আহমেদ নামে একজন বলেন, আমি একটি বাড়িতে কেয়ারটেকারের কাজ করি। পুরো বাড়িতে তিনটা গরু কোরবানি ছিল। তাই বাসার সবাইকে সাহায্য করতে ঢাকাতেই থেকে যাই। এখন কোরবানি কাজ শেষ করে, তাদের গুছিয়ে দিয়ে আমি বাড়ি যাচ্ছি। আর বাসা থেকে আত্মীয়ের যে ভাগগুলো দিয়েছে, সেগুলো সঙ্গে নিয়েছি পরিবারের জন্য।

সকালে ঈদের নামাজের পরই ঢাকার সব অলিগলিতে বৃষ্টিতে ভিজেই পশু কোরবানি শুরু করেছেন সবাই। তবে যাদের সুযোগ আছে তারা বাসার নিচের গ্যারেজে পশু কোরবানি করেছেন। আর এজন্য পাড়া-মহল্লার মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। পবিত্র ঈদুল আজহায় এ বছর দেশে প্রায় এক কোটি পাঁচ লাখ পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। শহরকেন্দ্রিক সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পশু কোরবানি হয়েছে রাজধানী ঢাকায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২৩
এইচএমএস/এসসি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।