ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মাদারীপুরে ভাঙন আতঙ্কে তিন শতাধিক পরিবার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২৩
মাদারীপুরে ভাঙন আতঙ্কে তিন শতাধিক পরিবার

মাদারীপুর: বর্ষা মৌসুমে পানি বাড়তে থাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে আড়িয়াল খাঁ নদে। এছাড়াও অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে নদ থেকে দিনের পর দিন বালু উত্তোলন করায় ভাঙন বাড়ার জন্য দায়ী বলে মনে করেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

 

মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের চর ঘুনসি এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনের মুখে রয়েছে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার। ফলে আতঙ্কে দিন কাটছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের।

জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিড়খাড়া ইউনিয়নের চর ঘুনসি এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে ৩ শতাধিক পরিবার ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এছাড়াও এর আশপাশের প্রায় এক হাজার পরিবারের লোকজনের মধ্যেও নদী ভাঙনের ভয় ও আতঙ্ক রয়েছে। নদীপাড়ের অসংখ্য পরিবার গত কয়েক বছরে একাধিক বার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। ভাঙনের ফলে অনেক পরিবার তিন দফাও ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে তাদের ঘর সরানোর আর জায়গা নেই। এবার ভাঙলে তাদের রাস্তায় থাকতে হবে। এছাড়াও চরঘুনসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিও হুমকির মধ্যে রয়েছে। তাই এখানকার মানুষ ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি তুলেছেন। একই সঙ্গে এই এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানান তারা।

স্থানীয় ইউনুস মুন্সী নামে এক ব্যক্তি বলেন, সাত/আট বছর ধরে নদীতে এই এলাকা ভাঙছে। ভাঙনের কারণে আমরা তিনবার ঘরবাড়ি সরিয়েছি, আমাদের ফসলি জমিও সব নদীর মধ্যে। এখনো নদী ভাঙছে। এবার ভাঙনের মুখে পরলে আর কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকবে না। এখানে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিলে অসংখ্য পরিবারের ঘরবাড়ি বেঁচে যাবে।

স্থানীয়রা জানান, এখানে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। এ কারণেই ভাঙন বেড়েছে। জরুরিভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।

স্থানীয়রা আরও জানান, ১০ বছর ধরে এখানে আমরা বসবাস করছি। অনেকেই রাতের আঁধারে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলে। এতে করেই ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে বার বার বললেও ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা বন্ধ হয়নি। তাই সবার কাছে দাবি, এখানে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা বন্ধ করা হোক। নদের পাড়ে প্রায় তিন শতাধিক মানুষের বসবাস। সবাই হুমকির মধ্যে আছে। যেকোনো সময় নদী গর্ভে চলে যেতে পারে আমাদের ঘর-বাড়ি। তখন আমাদের রাস্তায় থাকতে হবে।

শিরখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং আমাদের এমপি মহোদয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। এমপি ওই এলাকা পরিদর্শনও করেছেন। আমরা চেষ্টা করছি ভাঙন রোধে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের।

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সানাউল কাদের খান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবো। এরপর জরুরি বরাদ্দ এলে কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হবে। তাছাড়া এখানে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। এটা করতে বড় অংকের খরচ হবে। তাই আমরা একটি প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠাবো। সেটা অনুমোদন পেলে আমরা ওইখানে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে পারবো। সেটা সময়ের ব্যাপার। তাই প্রাথমিকভাবে জরুরি বরাদ্দ পেলে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনউদ্দিন বলেন, আমরা খুব দ্রুত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধসহ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫,২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।