কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সঞ্জয় প্রামাণিকের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত জাসদ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দিনভর তাণ্ডব চালিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টায় দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শল্যচিকিৎসা বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক সঞ্জয় প্রামাণিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। বুধবার সকাল থেকে ভেড়ামারা বাজারের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেয় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জাসদ সমর্থকদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটসহ ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া -পাল্টাধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।
এ ঘটনায় ৪ পুলিশ সদস্যসহ বিভিন্ন স্পটে আহত হয়েছেন অর্ধ শতাধিক।
বুধবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে। শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় প্রধান আসামি শোভনসহ ৫জনকে ঘটনার দিন রাতেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজকের অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় এখনও কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
এদিকে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, সকাল পৌনে ১১টায় শুরু হয়ে বেলা ৪টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
তিনি বলেন, শুরু থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মোট ৪টি বাড়িতে এবং একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বাড়িগুলিতে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। ঘটনার সময় বিভিন্ন স্পট থেকে ৫ জনকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ মুহূর্তে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত তথ্য বলা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, স্থানীয় একটি মন্দিরের কমিটি গঠন নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের জেরে বুধবার (২ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভেড়ামারা শহরের গোডাউন মোড় এলাকায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক সঞ্জয় প্রামাণিকের ওপর হামলা চালানো হয়।
এ সময় হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাথায় জখম হয় সঞ্জয়ের। হামলায় সঞ্জয়ের সঙ্গে থাকা বেলাল ও শ্যামল নামে আরও দুই স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী আহত হন।
জাসদ যুবজোটের জেলা ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান শোভনের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন মিলে এ হামলা করে বলে অভিযোগ।
গত ২ আগস্ট (বুধবার) রাতে সঞ্জয়ের ওপর হামলা ও গুলির ঘটনায় জড়িত অভিযোগ এনে তার স্ত্রী বিথী রানী বাদী হয়ে জাসদ যুবজোট নেতা মুস্তাফিজুর রহমান শোভনসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০/১২ জনকে আসামি করে ভেড়ামারা থানায় মামলা করেন।
এর দুদিন পর (৪ আগস্ট) দুপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সঞ্জয়কে ঢাকায় নিয়ে যায় তার পরিবার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০২৩
এসএএইচ