সিরাজগঞ্জ: ময়নাতদন্ত রিপোর্টে পানিতে ডুবে মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়। থানা পুলিশও মৃত্যুর একই কারণ উল্লেখ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মনির হোসেন ওরফে মনি (১৯) নামে এক কলেজছাত্র হত্যাকাণ্ডের ক্লু-লেস মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পিবিআই। এ মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া পলাতাক রয়েছেন আরও দুইজন।
ইতোমধ্যে গ্রেপ্তাররা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিরাজগঞ্জ পিবিআই এর পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তাররা হলেন- শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামের মৃত হাফিজের ছেলে আব্দুল কাদের (১৯) ও রুপপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে মাহবুব হাসান রিমন। নিহত মনির হোসেন মনি রূপপুর পুরানপাড়া গ্রামের রিকশা শ্রমিক হারুন অর রশিদের ছেলে ও মওলানা সাইফউদ্দিন এহিয়া ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
পিবিআই পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর নিখোঁজ হওয়ার দুইদিন পর ১২ নভেম্বর করতোয়া নদী থেকে ভিকটিম মনির হোসেন ওরফে মনির ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় ২১ নভেম্বর নিহত ওই যুবকের বাবা হারুন অর রশিদ অজ্ঞাতদের অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হিসেবে পানিতে ডুবে উল্লেখ করা হয়েছিল। থানা পুলিশও মৃত্যুর একই কারণ উল্লেখ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
পরে আদালতে বাদী নারাজির আবেদন করলে বিচারক অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে তদন্তের আদেশ দেন। পিবিআই মামলার তদন্তকালে গোয়েন্দা রিপোর্ট ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আব্দুল কাদের এবং মাহবুব হাসান রিমনকে গত ১৩ আগস্ট গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার দায় স্বীকার করে বলেন, মনির হোসেনের সঙ্গে তাদের চারজনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তারা প্রায়ই একসঙ্গে গাঁজা সেবন করতেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বন্ধুরা মিলে থানার ঘাট ব্রিজের পাশে নদীর ধারে বসে গাঁজা সেবন করেন। এ সময় মনির হোসেনের কাছে সবাই গাঁজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরই এক পর্যায়ে চারজন মিলে মনিকে মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে মনির নিস্তেজ হয়ে পড়লে সবাই তাকে নৌকায় তুলে করতোয়া নদীতে ফেলে পালিয়ে যান।
গত ১৪ আগস্ট আব্দুল কাদের ও গত ১৬ আগস্ট মাহবুব হাসান রিমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান জানান, ময়নাতদন্ত রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে পানিতে ডুবে উল্লেখ করা হয়। এ কারণে থানা পুলিশও পানিতে ডুবে মৃত্যু হিসেবেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গামাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রতন কুমার জানান, ময়নাতদন্তে গাফিলতি ছিল কিনা আরএমও ময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকরাও বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে ওই হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফরিদুল ইসলামকে বার বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৩
এফআর