ফরিদপুর: জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ তুলে ফরিদপুরের সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজকে (২৬) বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগের আরেকটি অংশ।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বহিষ্কারের এ দাবি তোলা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন আলম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৩ আগস্ট সাঈদী ইস্যুতে ফরিদপুরের ৯ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করেছে জেলা ছাত্রলীগ। সেই যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে সালথা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজ ফেসবুকে শোক প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দেন। পরবর্তীসময়ে তিনি তার ফেসবুক ওয়াল থেকে স্ট্যাটাস সরিয়েও নেন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতির এ রকম সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগ বিতর্কিত হয়। এ ঘটনা উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান এবং সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহামেদকে প্রমাণসহ অবগত করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, পরবর্তীকালে জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে গত ২৩ আগস্ট ৯ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হলেও সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি করা হয়, যে ব্যক্তি যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে শোক বার্তা প্রকাশ করলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিশ্বাসী সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের নেতারা যারা দায়িত্বে আছেন তারা পদত্যাগ করবেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
তবে, এব্যাপারে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজ এসবকে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দাবি করে তিনি বলেন, আমি ফেসবুকে সাঈদীকে নিয়ে কোনো পোস্ট দেইনি। এসব মিথ্যা ও বানোয়াট। সাঈদী মারা যাওয়ার ৫ দিন পর আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে ছাত্রলীগের একটা অংশ আমার নামে ও আমার ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে। সেখানে সাঈদীকে নিয়ে পোস্ট দেন এবং স্ক্রিনশট রেখে আইডিটি ডিজেবল করে দেয়। পরে বিষয়টি আমি অবগত হলে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তিনি দাবি করেন, কয়েকমাস আগে সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন রায়কে নারীঘটিত একটি কারণে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল জবিউল্লাহ আমার ওপর (ফিরোজ খান রাজ) হামলা চালালে তাকেও জেলা ছাত্রলীগ বহিষ্কার করে। এরপর থেকে তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফিরোজ খান রাজের নামে ও তার ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে একটি ফেক আইডি খুলে সাঈদীকে নিয়ে পোস্ট দেওয়া হয়। পরে একটি পক্ষ স্কিন শর্ট রেখে আইডিটি ডিজেবল করে দেয় বলে জেনেছি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ফিরোজ খান রাজ। তার (রাজ) ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। বিষয়টি ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা উপজেলা) আসনের এমপি মহোদয়ও অবগত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সালথা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রমিজ খান মুন্না, সহ-সভাপতি নাজমুল খান, সহ-সভাপতি এস এম শাকিল হুসাইন, সহ-সভাপতি হাবিবুল্লাহ ফাহাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল হাসান, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আনোয়ার কাজী, নাজমুল মাতব্বর প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০২৩
এসএএইচ