নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সাবেক স্ত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর অবস্থায় ওই নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার নারীর বর্তমান স্বামী বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে আড়াইহাজার থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। ঘটনাটি গত ২৭ আগস্ট ঘটে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ওই নারীকে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার কালাপাহাড়িয়া এলাকার ওই গৃহবধূর ৫ বছর আগে রাধানগর গ্রামের আ. লতিফের ছেলে শেখ ফরিদের (৩৫) সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের আগে ওই গৃহবধূর পরিবার জানতো না ফরিদ একজন মাদকসেবী। বিয়ের পর থেকে ফরিদ মাদকের টাকার জন্য ওই গৃহবধূকে বেধড়ক মারধর করতো। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিচার সালিশ হলেও শেখ ফরিদের কোনো পরিবর্তন হয়নি। অবশেষে বাধ্য হয়ে ওই বছরই কাজি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ফরিদকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে ওই নারী। এর এক বছর পর পারিবারিকভাবে কালাপাহাড়িয়া এলাকার এক যুবকের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকেন ওই নারী।
পরবর্তীতে ফরিদ তার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে তাকে ফোনে ভয়ভীতি দেখানোসহ বিভিন্ন সময় হুমদি-ধামকি দিতে থাকে। গত রোববার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাড়ির পাশের রাধানগর বাজরের ফার্মেসি থেকে ওষুধ আনার জন্য বের হলে রাস্তায় সাবেক স্বামী শেখ ফরিদ দেখতে পেয়ে ডাক দেয়। ডাকে সাড়া না দিলে ফরিদ তার মুখ চেপে ধরে তার অন্যান্য সহযোগী রাধানগর গ্রামের আ. লতিফের ছেলে মো. হালিম, নোয়াব মিয়ার ছেলে মো. মজিবুর, এসেন মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া ও আফাজদ্দিনের ছেলে আ. কাদির তাকে উঠিয়ে মেঘনা নদীর ঘাটে নিয়া যায়।
সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে মাঝ নদীতে নিয়ে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। স্ত্রীর খোঁজে বন্ধুকে নিয়ে ওই রাতেই তার স্বামী নদীর ঘাট এলাকায় গেলে ধর্ষণকারীরা দেখতে পেয়ে তাকে ট্রলারে তুলে নদীর মাঝখানে নিয়ে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করে মাঝ নদীতে রেখে চলে যায়। পরে সেখানে এসে স্ত্রীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্বামী। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল থানায় মামলা না করে মীমাংসা করার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং ধর্ষণের শিকার পরিবারকে নজরবন্দি করে রাখে। পরে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা বলে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) এলাকা থেকে থানায় এসে ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে ওই দিন দুপুরেই থানায় একটি মামলা করেন।
আড়াইহাজার থানার ওসি ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব জানান, মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২৩
এমআরপি/জেএইচ