ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চৌহালীতে থামছেই না নদী ভাঙন!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩
চৌহালীতে থামছেই না নদী ভাঙন!

সিরাজগঞ্জ: এক যুগেরও বেশি সময় ধরে যমুনার আগ্রাসন চলছে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায়। এ দীর্ঘ সময়ে নদী ভাঙনে ২১০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ উপজেলাটির অধিকাংশ এলাকায় গিলে খেয়েছে যমুনা নদী।

 

অনেক আগেই বিলীন হয়েছে উপজেলা পরিষদ, থানা ভবন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। চৌহালী উপজেলার বাকি অংশটুকু ভাঙন থেকে রক্ষার দাবি জানিয়ে আসছেন নদী তীরবর্তী মানুষরা। তবে এখনো নদী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় অব্যাহত রয়েছে ভাঙন।  

এ বছরও বর্ষা মৌসুমে দফায় দফায় যমুনার পানি বাড়া ও কমার সঙ্গে সমান তালে চলছে নদী ভাঙনও। সম্প্রতি উমারপুর ইউনিয়নের উমারপুর, খাষ পুখুরিয়া ইউনিয়নের উত্তর খাষপুখুরিয়া, বাঘুটিয়া ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জ, চরবিনানই, চর সলিমাবাদ, ভূতের মোড় এলাকায় ভয়াবহ ভাঙনে ৫শ বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে অসংখ্য গাছপালা, ৪০টি দোকান, ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শত শত বিঘা ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টানিয়ে অতিকষ্টে বসবাস করছেন ভাঙন কবলিতরা।  

অপরদিকে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে চৌবাড়িয়া বিএম কলেজ, পয়লা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, পয়লা দাখিল মাদরাসা, ৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, এতিমখানা, শত বছরের কবরস্থানসহ ১৭টি প্রতিষ্ঠান।  

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, চৌহালীর খাষপুখুরিয়া থেকে  চরসলিমাবাদ পর্যন্ত নদী তীর সংরক্ষণের জন্য প্রায় ৪৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এ প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন। তবে উদ্বোধনের তিন মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত কাজ শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ভাঙন কবলিতদের অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিতে নতুন করে আমরা গৃহহীন হয়েছি। যখন ভাঙন তীব্র হয় অল্প কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে চলে যায় আর খবর থাকে না। সময় মতো কাজ শুরু করলে নতুন করে শত শত ঘরবাড়ি আর বিলীন হতো না।  

চৌহালী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তিন বছর আগে পৈত্রিক ভিটেবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়। নদী আবারও বর্তমান বাড়ির কাছে চলে এসেছে। এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।  

বাঘুটিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম মোল্লা বলেন, দেওয়ানগঞ্জ, চরসলিমাবাদ ভূতের মোড়ের ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে৷  জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।  

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, চৌহালীতে দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙন রয়েছে। বন্যার পানি বাড়ার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি, পানি কমে গেলে অক্টোবরে কাজ শুরু করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।