ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাবি শিক্ষার্থী দিপীতা চাকমা সন্তু লারমার নাতনী

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩
ঢাবি শিক্ষার্থী দিপীতা চাকমা সন্তু লারমার নাতনী

রাঙামাটি: বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের শিজকছড়া এলাকা থেকে দিপীতা চাকমা নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ছাত্রী অপহরণের শিকার হয়েছিলেন, তিনি সন্তু লারমার নাতনী।

জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, সাবেক শান্তিবাহিনীর গেরিলা নেতা জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার আপন বড় বোনের নাতনী দিপীতা।

গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে দিপীতাকে অপহরণ করা হয়েছিল। একইদিন তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

দীপিতা চাকমা ঢাবি’র লোক প্রশাসন বিভাগের মার্স্টাসের শিক্ষার্থী। বিভাগের শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি সাজেকে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। পথে শিজকছড়া এলাকায় ভ্রমণকারীদের বহন করা গাড়ি থামলে সেখানকার পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে দিপীতাকে অপহরণ করে। এরপর তার বাবা স্মৃতেন্দু বিকাশ চাকমাকে মোবাইলের মাধ্যমে অপহরণের বিষয়টি জানানো হয়।

দীপিতার দাদা উপেন্দ্র চাকমা আশির দশকে খাগড়াছড়ি জেলার সংসদ সদস্য ছিলেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ট্রাইবেল কনভেশনের নেতা ছিলেন তিনি। সামরিক সরকার হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে শান্তিবাহিনীর সাথে সরকারের সংলাপের ব্যবস্থাও করেছিলেন তিনি। উপেন্দ্র সাবেক গেরিলা নেতা সন্তু লারমার আপন বড় বোনের স্বামী।

অপহরণের পর জানা যায়, বাঙালিদের সঙ্গে মেলামেশার কারণে দীপিতাকে তার গোত্রের লোকেরাই অপহরণ করেছিল। কেননা, অতীতে অনেক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি নারীদের সঙ্গে বাঙালিদের প্রেম ও বিয়ে হয়েছে। এ কারণে জীবনও দিতে হয়েছিল ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নারীদের।

অপহরণের ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই সমালোচনা ও নিন্দা জানানো হচ্ছে। যদিও পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী অপহরণের সাত ঘণ্টার মধ্যে দীপিতাকে সাজেকের দাঁড়িপাড়া বনোআদম এলাকা থেকে উদ্ধার করে।

গত ৭ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় দীপিতার বাবা স্মৃতেন্দু বিকাশ চাকমা বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে সাজেক থানায় মামলা করেন। পরে বনোআদম এলাকায় যেখানে দিপীতাকে উদ্ধার করা হয়েছিল সেখান থেকে দান প্রিয় চাকমা (২৬) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রিয় একই এলাকার অনিল কুমার চাকমার ছেলে। তিনি সন্তু গ্রুপের নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) রাজনীতিতে জড়িত।

পিসিজেএসএসর বাঘাইছড়ি উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ত্রিদিপ চাকমা অপহরণের ঘটনার তার দলের কোনো সম্পৃক্তা নেই বলে দাবি করেছেন। প্রিয় চাকমা তার দলের কেউ নন বলেও তিনি জানান।

রাঙামাটি পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, অপহরণের ঘটনার শিকার ভুক্তভোগীর বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। প্রিয় চাকমাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযানও অব্যাহত আছে।

যদিও গ্রেপ্তার প্রিয় কোন দলের সদস্য; ঘটনার অনুসন্ধানের স্বার্থে এ ব্যাপারে কিছু জানাননি পুলিশ সুপার।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।