ঢাকা: সিন্ডিকেটের কারণে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে বলে আবারো সংসদে বিষয়টি তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের সদস্যরা। জাবাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রী জাননিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার(১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বাণিজ্য সংগঠন(সংশোধন) বিল, ২০২৩ এর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা এ অভিযোগ করলে বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
আলোচনায় গণফোরামের সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, কাচা মরিচ, আলু বিদেশ থেকে আসে না। এ সবের সংকট ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে হওয়ার কথা নয়। গুদামে পর্যাপ্ত পরিপাণে মজুত থাকার পরেও আলুর দাম অনেকটা বেড়ে গেছে। কারণ একটাই এখানেও সিন্ডিকেট। এই সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি বহুবার সিন্ডিকেটের কথা অস্বীকার করেছেন। এখন মানুষ যখন বলতে শুরু করেছে বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই সিন্ডিকেটের হোতা, তখনই সত্য কথা বলতে শুরু করলেন। তিনি বলেছেন সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না।
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, অর্থনীতি ভালো নেই। কষ্টে আছে সাধারণ মানুষ সন্দেহ নেই। গরিবদের সুরক্ষার সময় এখন, সুরক্ষার জন্য অর্থ এই মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে। এই ১৬ কোটি মানুষের দেশে, হাজার হাজার বাজার কিভাবে ম্যানেজ করবেন। এগুলো মন্ত্রীর পক্ষে সম্ভব না। একমাত্র ব্যালেন্স হবে যখন সরকারের কিছু মজুদ থাকবে এবং সরকার সেখান থেকে কম দামে দেবে তখন।
জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, একবছর আগে চিনির দাম ছিল ৮৮-৯০ টাকা এখন তা ১৩০-১৩৫ টাকা, ডিম ছিল ৪০-৪২ টাকা এখন তা ৪৮-৫২ টাকা, রসুনের দাম বেড়েছে ২২৯ শতাংশ। গরুর মাংস, বয়লার মুরগি, রুই মাছ সবকিছুর দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রী কেন সিন্ডিকেট ধরতে পারছে না তা আমরা জানি না।
উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আমাকে অনেক সময় ব্যবসায়ী, সিন্ডিকেটের হোতা এসব বলা হয়। সে কারণে এই পার্লামেন্টে আমাকে বহুবার বলতে হয়েছে, ব্যবসা করার অনেক আগে থেকেই আমি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অনেক মনোপলি ব্যবসাদার বা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়ায় এটা সত্য। তবে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সার্বিকভাবে যে পরিস্থিতি, মুক্তবাজার অর্থনীতি, বৈশিক ভাবে দাম বেড়েছে সে দিকেও আপনাদের নজর দিতে হবে। সাপ্লাই ঠিক না থাকলে দাম বাড়ে। আমরা আজকে ডিমের দাম বেঁধে দিয়েছি, যদি সেটা তারা না মানে তবে অবিলম্বে ডিম আমদানি করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা জানি বৈশ্বিকভাবে, পরিবহন খরচ বাড়ায় বা বিভিন্ন কারণে বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। এটা দু’ভাগে ভাগ করতে পারি, একটা হলো ইমপোটেড গুডস যেমনঃ সোয়াবিন তেল, চিনি, ডাল ইত্যাদি। এগুলো জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম থাকে সে দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের দাম নির্ধারণ করতে হয়। আজ সোয়াবিনের দাম ৫ টাকা কেমেছে। তিনি বলেন, আমাদের যে চিনি লাগে তার ৯৯ শতাংই ইমপোর্ট করতে হয়। এই চিনির ওপরে আমাদের প্রায় দেশীয় ৪০ শতাংশ ভ্যাট এবং ট্যাক্স রয়েছে, তার পরে এ দাম আসছে। আমাদের এক শতাংশ চিনিও আমরা উৎপাদন করতে পারি না। দ্বিতীয় জিনিস দেশীয় উৎপাদিত দ্রব্যর দাম কেন বাড়ে। কখনো কখনো হঠাৎ কোন দ্রব্যের ওপর সিন্ডিকেট করে বা দাম বাড়ানোর সুযোগ নেয় ব্যবসায়ীরা। যেমন ডিমের কথা যদি বলা হয়, দাম বাড়ছে। এটা প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে। এই ডিমের লাখ লাখ খামারি আছে আর কিছু বড় ব্যবসায়ীও আছে। তাই লাখ লাখ ব্যবসায়ীকে আমরা কিভাবে কন্ট্রোল করবো। আজকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কৃষিজ পণ্যের দাম নিয়ে বসেছিলাম। পেয়াজের দাম (৬০-৬৫), আলুর দাম (৩৫-৩৬), ডিমের দাম, ইত্যাদি কি হবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে, বলে দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় ২০০৪ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩
এসকে