সাতক্ষীরা: চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে করা মামলায় সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সাতক্ষীরা সদর থানা সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সাউদ সাদাত শনিবার সকালে মাকসুদ খাঁন ও তার ম্যানেজার মহসিন আলীসহ পাঁচজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন, মামলা ও মাকসুদ খানকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বেশ রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সাউদ সাদাতকে ভোমরায় এক বাড়িতে আটকে রেখে ১৩ দিন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খানের বিরুদ্ধে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় সাউদ সাদাতকে উদ্ধার করা হয়। এসময় আটক করা হয় মাকসুদ খানের ম্যানেজার মহসিন আলীকে। শনিবার সকালে সাউদ সাদাত বাদী হয়ে ১৬৫ ধারায় সাতক্ষীরা সদর থানায় মাকসুদ খান, ম্যানেজার মহসিন আলী, কর্মচারী আকাশ হোসেন, রাকিব হোসেন ও আজিজুল ইসলাম টপিকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মাকসুদ খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে শুক্রবার রাতে ম্যানেজার মহসিন আলীকে গ্রেপ্তারের পর ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খান গণমাধ্যমকে জানান, সাউদ সাদাতের সঙ্গে তার চার মাস ধরে ব্যবসা চলছিল। লেনদেনও ভালো ছিল। তবে কোরবানি ঈদের দশদিন আগে তার কাছ থেকে এক কোটি ২৩ লাখ টাকার শুকনা মরিচ, রসুন, পেঁয়াজ নিয়ে আর টাকা দেননি সাউদ সাদাত।
মাকসুদ খান আরও জানান, গত ২৫ জুন তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে যান। সে সময় তাকে দুটি চেক দেওয়া হয়। গত ১২ জুলাই তিনি একটি চেক ব্যাংকে জমা দিলে টাকা না থাকায় সেটি প্রত্যাখ্যাত হয়। পরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে ৮ আগস্ট পুনরায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী যান এবং সাউদ সাদাতের বাড়িতে যেয়ে পাওনা টাকা পরিশোধের কথা বললে তাকে হুমকি ধমকি দেওয়া হয়। তখন তিনি হাটহাজারী থানায় বিষয়টি উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
মাকসুদ খান জানান, সাউদ সাদাত সম্প্রতি সাতক্ষীরায় আসেন এবং গত সপ্তাহে তাকে ৩ লাখ ৮০ টাকা পরিশোধ করেন এবং বাকি টাকা ১৭ সেপ্টেম্বর পরিশোধ করবেন বলে জানান। সেই থেকে তিনি ভোমরায় তার (মাকসুদ খানের) অফিসে অবস্থান করছিলেন। সেখানে দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এসে থাকেন।
তাকে আটকে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে মাকসুদ খান বলেন, সাউদ সাদাত আমার ম্যানেজারের সঙ্গে একসঙ্গে এক রুমে থাকতেন, খাওয়া-দাওয়া করতেন। ১৭ সেপ্টেম্বর তার পাওনা টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা যাতে না দিতে হয় সেজন্য তিনি এই অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন।
মাকসুদ খানের দাবি, সাউদ সাদাত আমার অফিসে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মতোই থেকেছেন, নিয়মিত মোবাইলে তার পরিবারসহ অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন, ভোমরায় হোটেলে খাওয়া দাওয়া করেছেন এবং ভোমরায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। এসময়ের মধ্যে তিনি ভোমরা থেকে চট্টগ্রামে মালামালও পাঠিয়েছেন।
তখন মাকসুদ খান বলেন, টাকা পরিশোধের ওয়াদা খেলাপ করতেই তাকে নির্যাতনের নাটক সাজানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে, শনিবার সকালে ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খানকে গ্রেপ্তারের পর তার কর্মচারীরা বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
আরএ