ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রায়ের ১৪ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২৩
রায়ের ১৪ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীন

ঢাকা: ২০০৬ সালে ঢাকার কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর ইউপি মেম্বার আনোয়ার হোসেনকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় (৬৪) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাতে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলার রায়ের ১৪ বছর পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো।

র‌্যাব জানায়, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রোহিতপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনকে কেরানীগঞ্জের সৈয়দপুর ঘাটে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষে ২০০৮ সালের ৩১ মে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও নেতৃত্ব প্রদানকারী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিনসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। আদালত ২০০৯ সালের ২৫ আগস্ট পলাতক আসামি কামাল উদ্দিনসহ দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড, তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও তিনজনকে খালাস দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে নজরদারির ধারাবাহিকতায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ এলাকা থেকে কামাল উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, নিহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি মেম্বার ছিলেন। পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে আড়তদারের ব্যবসা করতেন। বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম, মাদকসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ, ভূমি দস্যুতাসহ বিভিন্ন অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তার জনপ্রিয়তা ছিল।

রোহিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কামাল উদ্দীনের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, কামাল উদ্দীন ইউপি চেয়ারম্যান থাকাকালীন এলাকায় একটি সন্ত্রাসী দল গঠন করে অবৈধ বালুর ব্যবসা, ভূমি দখল, ত্রাণের মালামাল আত্মসাৎ করতেন। নিহত আনোয়ার বিভিন্ন সময়ে তার বিভিন্ন অবৈধ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে প্রতিবাদ করতেন। এ কারণে আনোয়ার স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

কামালের অবৈধ বালুর ব্যবসা ও ভূমি দস্যুতা নিয়ে সে সময় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পেছনে আনোয়ারের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ধারণা করেন কামাল। আনোয়ারের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ও এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তারের জন্য কামালের পরিকল্পনায় আনোয়ারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, মামলা করার পর থেকে কামাল দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে ২০০৭ সালে কৌশলে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে চলে যান। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ফিরে এসে নিজের পরিচয় গোপন রেখে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বসবাস শুরু করেন। গোয়েন্দা নজরদারির ধারাবাহিকতায় অবশেষে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২৩
পিএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।