ঢাকা, বুধবার, ২৮ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় হামুন তাণ্ডব: পেকুয়ায় দুই হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, নেই বিদ্যুৎ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২৩
ঘূর্ণিঝড় হামুন তাণ্ডব: পেকুয়ায় দুই হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, নেই বিদ্যুৎ

কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সব ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার ঘরবাড়ি। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিহীন পুরো উপজেলা।

ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার সদর ইউনিয়ন, মগনামা, উজানটিয়া ও রাজাখালী ইউনিয়ন। আধা ঘণ্টার তাণ্ডবে প্রায় পাঁচ হাজার ছোটবড় গাছ ভেঙে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেকুয়া সদরের গোয়াখালী, সিরাদিয়া, বটতলিয়া পাড়া, দিয়া পাড়াসহ উজানটিয়া ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি গ্রামে কাঁচাঘর ভেঙে গেছে। কারো কারো টিনের চালা উড়ে গেছে, সড়কে পড়ে আছে বড় বড় গাছ আর কোথাও কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। সড়কের গাছ অপসারণের কাজ করছেন স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস, থানা পুলিশ ও সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকরা। আর তা তদারকি করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা।

একই চিত্র উপজেলার সব ক’টি ইউনিয়নের। এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

পেকুয়া সদর গোয়াখালী বতটলিয়া পাড়ার বাসিন্দা আবু ছিদ্দিক বলেন, হঠাৎ করে আসা উত্তরের বাতাস মুহূর্তের মধ্যে আমার ঘরের চালা উড়িয়ে নিয়ে যায়। ফলে ঘরের জিনিসপত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

একই এলাকার ছমি উদ্দিন বলেন, কিছুদিন আগের বন্যায় ঘরটি আংশিক ভেঙেছিল। তারপরও কোনোমতে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু কাল ঘূর্ণিঝড়ে আমার সব শেষ হয়ে গেলো।

মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুস চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে মগনামা ইউনিয়নে ১২১টি বসতঘর সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। ৩৯২টি ঘর মাঝারি ক্ষতিগ্রস্ত ও তিন হাজারের অধিক গাছপালা ভেঙে গেছে, বিদ্যুৎ লাইনেরও বেশ ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তাহের জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে ৬০০ ঘরবাড়ি পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত ও ৮০০ ঘরবাড়ি মাঝারি ক্ষতিগ্রস্ত বলে এই পর্যন্ত খবর পেয়েছি।

তবে এই ঝড়ে পেকুয়া উপজেলার বিশ হাজারের মতো মানুষ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বুধবার থেকে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎবিহীন আছেন এ উপজেলার মানুষ। মোবাইল সেবাও বন্ধ আছে।

পেকুয়া পল্লী বিদ্যুৎ সাব জোনাল অফিসের এজিএম দিপন চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পেকুয়ায় মেইন লাইনের ৫৭টি খুঁটিসহ মোট ১২৭টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন দিনরাত কাজ করছেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও দুই-তিন দিন সময় লাগতে পারে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে উপজেলার সব ইউনিয়নে কম বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেকগুলো, কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। বিদ্যুৎ খুঁটি উপড়ে পড়েছে এবং কয়েক হাজার গাছ পালা ভেঙে গেছে।

প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান ইউএনও পূর্বিতা চাকমা।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২৩
এসবি/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।