যশোর: যশোর সদরের ঝুমঝুমপুর এলাকার রাজিম ওরফে সাজেদ (১৭) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শনিবার (১১ নভেম্বর) পৃথক দুটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন- শহরের বারান্দীমোল্লাপাড়া এলাকার ইয়াসিন বিশ্বাসের ছেলে মোহাম্মদ পায়েল (১৯), রুস্তম গাজীর ছেলে শিমুল গাজী (২৫), পূর্ববারান্দীপাড়ার রাইজের ছেলে রায়হান (২০) ও ঝুমঝুমপুরের চান্দের মোড়ের আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে রায়েব সিদ্দিক (১৭)।
গ্রেপ্তার চারজনকে আদালতের মাধ্যমে যশোর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার চারজনসহ পাঁচজনের নামে থানায় মামলা করেন সাজেদের বাবা। পুলিশ ও র্যাব বলছে, বন্ধুর ছুরিকাঘাতের প্রতিশোধ নিতে অপর বন্ধুরা সাজেদকে হত্যা করে।
সাজেদ সদর উপজেলার ঝুমঝুমপুর স্কুল মোড় এলাকার বাদল খানের ছেলে। তিনি ঝুমঝুমপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র ও শহরের চুড়িপট্টি এলাকার একটি দোকানের বিক্রয়কর্মী ছিল।
র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, সাজেদ পড়াশোনার পাশাপাশি যশোরের বড়বাজার চুড়িপট্টি এলাকায় একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সাজেদ ও গ্রেপ্তার আসামিরা একই স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা করতেন। গত এক মাস আগে সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র পায়েলকে সঙ্গে পূর্বশত্রুতার জেরে সাজেদ ছুরিকাঘাত করে। এ ঘটনার পর থেকে সাজেদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল পায়েলের বন্ধুরা। গত ৯ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে পায়েল, শিমুলসহ কয়েকজন সাজেদকে দোকান থেকে ডেকে পাশের গলিতে চায়ের দোকানে নিয়ে যান। এরপর সেখানে তাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় সাজেদের বাবা মামলা করেন। ওই ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। এরপর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে বারান্দি মোল্লাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে পায়েলকে এবং গাড়িখানা রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিমুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার আসামিরা জানিয়েছেন পায়েল নামে তাদের এক বন্ধুকে সাজেদ ছুরিকাঘাত করেন। ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে সাজেদের ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। আসামিদের হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করা হয়।
এদিকে যশোর পুলিশের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাজেদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে শনাক্ত হওয়া পাঁচ দুর্বৃত্তের মধ্যে রায়হান ও রায়েব সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরিসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধার করা হয়।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চুড়িপট্টি এলাকায় সাজেদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচজনই শনাক্ত হয়েছে। পুলিশ দুই জনকে আর র্যাব দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পলাতক একজনকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে। এ ঘটনার পেছনে কেউ থাকলে তাকেও গ্রেপ্তারের আওতায় আনা হবে। ছেলে হত্যার ঘটনায় সাজেদের বাবা পাঁচজনের নামোল্লেখ করে এবং দুই থেকে তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন।
নিহত সাজেদের বাবা বাদল খান ও বড় ভাই হাফিজুর রহমান এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২৩
ইউজি/আরআইএস